তথ্য গোপন! সদস্যপদ খারিজ হতে পারে এই প্রভাবশালী বিজেপি সাংসদের?
গত লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং মনোনয়ন পেশের সময় হলফনামায় দাবী করেছিলেন শেয়ারবাজারে তাঁর কোনও বিনিয়োগ নেই। কিন্তু, ব্যাঙ্গালোর ফোর্ট ফার্মস লিমিটেড নামের একটি বাণিজ্যিক সংস্থার আর্থিক রিপোর্টে প্রকাশ, ২০১৮র সেপ্টেম্বরে অর্জুন সিংয়ের নামে ওই সংস্থার ২ লক্ষ শেয়ার কেনা হয়েছিল। ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রত্যেকটি ত্রৈমাসিকের হিসেবেই অর্জুনের নামে সমপরিমাণ শেয়ার থাকার তথ্য শেয়ার বাজারকে দেখিয়েছে তারা। ব্যারাকপুরের সাংসদের হলফনামায় যে প্যান দেওয়া আছে, সেই একই প্যানের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে সংস্থাটির নথিপত্রেও।
তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি যদি কোথাও বিনিয়োগ করে থাকি, সেখানে আমার প্যান থাকতেই পারে। আমি ২০১৮ সালে ওই শেয়ার কিনলেও তা আমার নামে অ্যালটমেন্ট হয়েছিল অনেক পরে। ততদিনে মনোনয়নপর্ব মিটে গেছিল। তাই হুলফনামায় ওটা উল্লেখ করার দরকারই পড়েনি। অর্থাৎ ব্যাঙ্গালোর ফোর্ট ফার্মস লিমিটেডে আমি যে ইনভেস্ট করেছিলাম সেটা ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পরে আমার নামে অ্যালট হয়েছিল। ২০১৮ সালে নয়। ১৮ সালে যদি আমি শেয়ার কিনে থাকি, তা হলে পরের বছর ওটা শো করবে আমি যে তথ্য দিচ্ছি, সেটা আমার ইনকাম ট্যাক্স কো অর্ডিনেটরের সঙ্গে কথা বলেই দিচ্ছি।’
ব্যাঙ্গালোর ফোর্ট ফার্মস লিমিটেডের তথ্যে প্রকাশ, ২০১৮ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর অর্জুন সিং তাদের দু’লক্ষ শেয়ার কিনেছিলেন যা সংস্থাটির মোট শেয়ারের ৪.১৭ শতাংশ। ওই শেয়ার কেনার সুবাদে ভাটপাড়ার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার হোল্ডারদের তালিকায় জায়গা পান।
অর্জুন হলফনামা পেশ করেছিলেন ২০১৯ এর এপ্রিল মাসে তার আগে ৩১ মার্চ ফুরিয়ে গিয়েছিল ১৮-১৯ আর্থিক বছর। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যে হলফনামা পেশ করতে হয়, সেখানে স্থাবর-অস্থারর দু’ধরনের সম্পত্তিরই সম্পূর্ণ বিবরণ নেওয়া বাধ্যতামূলক। হলফনামা অনুযায়ী অর্জুনের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ২৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ১৯১ টাকা, সমবায় এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক মিশিয়ে তার নামে যেখানে যত সেভিংস আ্যকাউন্ট আছে, সব হিসেবই খুঁটিয়ে উল্লেখ করেছেন অর্জুন। হলফনামার যে অংশে কোনও সংস্থার বন্ড, ডিবেঞ্চার বা শেয়ারে বিনিয়োগের তথ্য জানাতে হয়েছিল সেখানে ‘নিল’ উল্লেখ করেছেন তিনি।
হুলফনামার নিয়মাবলীতেই স্পষ্ট বলা আছ্ছ, প্রার্থী যদি কোনও নথিভুক্ত কোম্পানিতে বিনিযোগ করে থাকেন, তা হলে তাঁর কেনা বন্ড, ডিবেঞ্চার বা শেয়ারের তখনকার বাজারমূল্যও উল্লেখ করতে হবে। অর্জুনের অবশ্য বক্তব্য, “চাইলেই তো শেয়ার পাওয়া যায় না। হলফনামায় আমি উল্লেখ করিনি মানেই তখনও আমার নামে শেয়ার আ্যালট হয়নি।”