ঠিক কিভাবে কোভিড সংক্রমণ হয়?
করোনা ভাইরাসের সঙ্গে সহবাসের সাত মাস প্রায় কেটে গেছে। এখনও আমরা বুঝে উঠতে পারিনি, ঠিক কিভাবে সংক্রামিত হচ্ছে মানুষ। ফের লকডাউনের পথে যাওয়া, সম্ভব নয়। বরং দোকান, বাজারে ভালো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হোক। সকলে মাস্ক পরুন। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলুন। তাহলেও সংক্রমণ কমবে।
কিভাবে ভাইরাস যাতায়াত করে?
সংক্রমণ তখনই হতে পারে, যখন কারও সামনে দাঁড়িয়ে আমি অন্তত পাঁচ মিনিট কথা বলছি বা গান গাইছি। যখন কারও সঙ্গে দূরত্ব অনেকটাই কম। যখন একটি ছোট জায়গায় বহু লোক গিজগিজ করছে। সবাই খুব চিৎকার করে কথা বলছে। বা যখন কোনও ভিড় জায়গায় বাতাস চলাচলের তেমন ব্যবস্থা নেই। এসব ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আমরা যখন কাশি, কথা বলি, শ্বাস নিই, তখন মুখ, নাক থেকে বিভিন্ন মাপের ক্ষুদ্র কণা ছিটকে আসে। সেই কণার ঘাড়েই বসে থাকে ভাইরাস।
একটি ভাইরাস দেহে ঢুকলেই কিন্তু সংক্রমণ হয় না। সংক্রমণ হতে গেলে শরীরে নির্দিষ্ট সংখ্যাক ভাইরাসকে প্রবেশ হবে। সেই ভাইরাস তার পর প্রবেশ করে শ্বাসনালীতে। এসিই–২ গ্রাহকের মাধ্যমে তা প্রবেশ করে কোষে। তার পর চলে বংশবৃদ্ধি।
এই পদ্ধতি থেকে স্পষ্ট, কথা বললে এবং কাশলে অনেকটা পরিমাণ বাতাস এবং তাতে ভর করে কণা মুখ, নাক থেকে বেরিয়ে আসে। এই কণাতে থাকতে পারে করোনা ভাইরাস। তার পর তা ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। নাক, মুখ থেকে নিঃসৃত কণা ভারি হয়। তাই অনেক সময়ই মাটিতে পড়ে যায়। কিন্তু দুটো মানুষের মধ্যে দূরত্ব কম হলে তা আর মাটিতে পড়ে না। উল্টো দিকের ব্যক্তির দিকে ধেয়ে যায়। তবে বেশ কিছু গবেষণা বলছে, করোনা ভাইরাস বাতাসে অনায়াসে ভেসে বেড়াতে পারে। সেক্ষেত্র কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশী।
তবে বদ্ধ জায়গায় সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক বেশী। বাতাস চলাচল ভালো হয়, এমন জায়গায় কিন্তু ঝুঁকি কম। চীনের গুয়াংঝৌয়ের একটি ঘটনা তার প্রমাণ। সেখানে একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে এক ব্যক্তি আশপাশের টেবিলে পাঁচ জনকে সংক্রামিত করে। কারণ রেস্তোরাঁয় বাতাস চলাচলের জায়গা ছিল না। ভাইরাস কণা তাই ওই ছোট জায়গাতেই ঘুরে বেড়িয়েছে আর সকলকে সংক্রামিত করেছে।
ঠিক এই কারণেই জিম, পার্লার, থিয়েটার, পানশালা, অনুষ্ঠানে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশী। একটি সমীক্ষা বলছে, ১০ শতাংশ কোভিড রোগী থেকেই ৮০ শতাংশ কোভিড রোগী সংক্রামিত হন। তবে সাবধানে চললে একই বাড়িতে বসবাসকারীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কম। ৪ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশ ঝুঁকি রয়েছে বলে জানাল সমীক্ষা। সেখানে স্বামীর থেকে স্ত্রী বা স্ত্রী থেকে স্বামীর মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি ২৭.৮ শতাংশ।