সাত দিনের মধ্যেই রাজ্যে রোজ ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যকে আরও বেশি করে নমুনা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিন সাতেকের মধ্যে রাজ্যে প্রতিদিন অন্তত ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করাতে পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য ভবন। তবে নবান্নের শীর্ষ কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে নয়, রাজ্যের সংক্রমণের গতি প্রকৃতি দেখেই আরও পরীক্ষা বাড়ানো হবে।
রাজ্য কি নমুনা পরীক্ষার জাতীয় গড় ছুঁতে চাইছে? স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা জানাচ্ছেন, জাতীয় গড় ছুঁতে হলে রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। রাজ্যের সংক্রমণ যেমন যেমন হবে, নমুনা পরীক্ষাও তেমনই বাড়ানো হবে। সেই হিসেবেই দিন সাতেকের মধ্যে প্রতিদিন ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা হবে বলে জানান এক শীর্ষ কর্তা।
ওই কর্তার কথায়,‘‘করোনার সংক্রমণের শুরুতেই অন্য রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা বেশি হয়েছে। সে সময় রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা কম হয়েছে। কিন্তু গত এক-দেড় মাসে রাজ্যের পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে।’’
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, এখন সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন ২২ হাজার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। বাকি ৪-৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও পরীক্ষাগারে। এই সংখ্যাটাই আরও বাড়ানো হবে। ১১ অগস্ট পর্যন্ত নাইসেড প্রতিদিন ১৮০০ নমুনা পরীক্ষা করেছে, বৃহস্পতিবার থেকে তা বেড়ে হবে ৩২০০। হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতার কয়েকটি হাসপাতাল, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া এবং ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার নমুনা নাইসেডে পরীক্ষা করা হবে। কলকাতা পুর এলাকা ও হাওড়ার প্রতিদিন ১৫০০ নমুনা পরীক্ষা করবে পিজি হাসপাতাল। পূর্ব মেদিনীপুর, নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা এবং আর জি করের নিজস্ব নমুনা মিলিয়ে রোজ ১৩০০ নমুনা পরীক্ষা করার ভার দেওয়া হয়েছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজকে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ১৪০০, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে প্রতিদিন ১৮০০ নমুনা পরীক্ষা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। সরকারি ১৭টি হাসপাতাল থেকে ১৩ অগস্ট ২২০০০ নমুনা পরীক্ষা হবে। এর বাইরে বেসরকারি হাসপাতালেও নমুনা পরীক্ষা বাড়ছে। বেসরকারি পরীক্ষাগারেও নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন।
এক কর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়নি। রাজ্যে এখন সংক্রমণ বাড়ছে ফলে এক জন রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা করাতে হলে পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়বে। সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসাদের যাতে দিন তিনেকের মধ্যে পরীক্ষা করে আলাদা করে নেওয়া যায়, সেটা করা হচ্ছে। মাঝে কিছুদিন কিটের সমস্যা হলেও এখন সেই সমস্যা নেই বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)