বাঘিনী শীলা জন্ম দিল তিন শাবকের
করোনা পরিস্থিতির মাঝেই সুখবর বেঙ্গল সাফারি পার্কে। বুধবার ভোরবেলায় তিনটি ব্যাঘ্র শাবকের জন্মকে কেন্দ্র করে আপাতত খুশির হাওয়া বইছে সেখানে। শীলা যে ফের মা হতে চলেছে, সে খবর অবশ্য আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। জানা গিয়েছিল, সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই নতুন সদস্যের আগমন ঘটতে পারে পার্কে। হলও তাই। ভাই-বোনের সংখ্যা বাড়ল কিকা ও রিকার। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে মা এবং তিন সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। এখন মোট ৭টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে বেঙ্গল সাফারি পার্কে। যা নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত পার্কে ডিরেক্টর ধর্মদেও রাই।
তিন নতুন সদস্যের আগমনে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ বেজায় খুশি। বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও উচ্ছ্বসিত। এর আগেও অবশ্য তিনটি সন্তানের জন্ম দিয়েছে বাঘিনী শীলা। তবে এবার শীলার সঙ্গী কিন্তু অন্যজন। এর আগে স্নেহাশিসের সঙ্গে সুখের সংসার সেরেছে সে। ২০১৮ সালের ১১ মে-তে ওই দম্পতির তিন সন্তানের জন্ম হয়। ২ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই তিন বাঘ শাবকের নামকরণ করে কিকা, রিকা এবং ইকা। কিন্তু ২৯ অক্টোবর শারীরিক দুর্বলতার কারণে মারা যায় ইকা। তারপরে অবশ্য বাকি দুই শাবক কিকা ও রিকা বেড়ে ওঠে সাফারি পার্কে। কিন্তু ওই বছরের শুরুতেই স্নেহাশিসকে নতুন সংসার পাততে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্নেহাশিস যেতেই কিছুটা মন মরা হয়ে গিয়েছিল শীলা। এদিকে প্রথম বাঘ প্রজননে সাফল্য লাভ করায় দ্বিতীয়বারের প্রস্তুতি শুরুর পরিকল্পনা করে ফেলেছিল পার্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু স্নেহাশিসের পর শীলার সঙ্গে কে সংসার করবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল তারা।
সেসময় পার্কে আরেক পুরুষ বাঘ বিভান ছিল। তবে স্নেহাশিসের সময় অবশ্য বিভানকে খুব একটা পছন্দ হয়নি শীলার। কিন্তু এখন স্নেহাশিস না থাকায় বিভানকেই নিজের সঙ্গী হিসেবে মেনে নেয় শীলা। দুজনের বোঝাপড়ার জন্য প্রায় তিন মাস সময় লেগে যায়। প্রথমে তাদের পাশাপাশি দু’টি এনক্লোজারে এক মাস রাখা হয়। এরপর দু’জনকে নাইট শেল্টারে একসঙ্গে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পুরো প্রক্রিয়াতেই নির্জন ও নিরিবিলি পরিবেশের প্রয়োজন হয়, তাই দম্পতিকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা হয়েছিল। এরই মধ্যে করোনার জন্য লকডাউন জারি হলে পর্যটকহীন হয়ে যায় সাফারি পার্ক। এতে প্রজননে আরও বেশি সহায়ক পরিবেশ হয়ে যায়। দ্বিতীয়বার বাঘ প্রজননে সাফল্য লাভ করায় খুশি বেঙ্গল সাফারি পার্ক।