রাজ্য নয়, ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে কেন্দ্র
রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে নিজেরাই করোনার প্রতিষেধক কেনার কথা ভাবছিল বেশ কিছু রাজ্য। তা জানতে পেরে আজ সেই পথ আটকে দিল কেন্দ্র। ভ্যাকসিন নিয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি আজ বৈঠকের শেষে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও রাজ্যের আলাদা করে ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রয়োজন নেই। যা করা হবে, কেন্দ্রীয় ভাবেই করা হবে।
সদ্য গত কালই করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছে রাশিয়া। তার পরেই আজ বৈঠকে বসেছিল ভ্যাকসিন নিয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। তিন দিনের মাথায় স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে বক্তৃতা করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনেকেই মনে করছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে সেখানে কিছু ইতিবাচক ঘোষণা থাকতে পারে। শোনা যাচ্ছে, রাশিয়ার টিকা ভারতে ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, রাশিয়ার টিকার মান, নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা সম্পর্কিত তথ্যের অভাব রয়েছে। এমন টিকা ব্যবহারের ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর প্রায় সাত মাসের মাথায় আজ প্রথম বার বৈঠকে বসে ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ কমিটি। বৈঠকে ছিলেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল, স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ-সহ অন্য বিশেষজ্ঞরা। বৈঠকে উপস্থিত এক সদস্যের কথায়, ঠিক হয়েছে কেন্দ্রীয় ভাবে ভ্যাকসিন কেনা হবে। তার পর তা রাজ্যগুলিকে দেওয়া হবে। রাজ্যগুলির আলাদা করে টিকা সংগ্রহ করার দরকার হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার টিকা ভারতে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে ওই আমলা বলেন, মানবদেহে তৃতীয় ধাপের প্রয়োগ এড়িয়ে গিয়েছে রাশিয়া। গোড়ার ধাপগুলিতেও টিকার প্রভাব কী পড়েছে, সেই বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি। সব মিলিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। মাস দেড়েক আগে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিন ১৫ অগস্টের মধ্যে বাজারে আনার একটি পরিকল্পনা নিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু নির্দিষ্ট ধাপ না মেনে এগিয়ে গেলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মত দেন ভাইরোলজিস্টরা। ফলে তাড়াহুড়ো না করে নিয়ম মেনে ধাপে ধাপে পরীক্ষার করারই ইঙ্গিত দেয় ভারত বায়োটেক।
রাশিয়া গত কাল টিকা আবিষ্কারের দাবি করার পরেই তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানুয়ারির আগে কোনও টিকা বাজারে আসা অসম্ভব বলে দাবি করেছে, সেখানে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ এড়িয়ে গেলে তবেই সেপ্টেম্বর মাসে টিকা আনা সম্ভব। ব্যবসার কথা মাথায় রেখে কেবল বাজার ধরতেই তড়িঘড়ি ওই টিকা আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কুড়িটি দেশ ওই টিকা নিজেদের দেশে আমদানি করার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে।