শিল্পতালুকে দ্রুত জমি পেতে আবেদন উদ্যোগপতিদের
শিল্পহীন জেলা আলিপুরদুয়ারে ফুড প্রসেসিং ও অটোমোবাইল অনুসারী শিল্প তৈরির লক্ষ্যে রাজ্যের শিল্পদপ্তর উদ্যোগী হয়েছে। এ জন্য কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও বর্ষার মধ্যেও জেলার ভারত-ভুটান আন্তর্জাতিক সীমান্ত কালচিনির জয়গাঁয় এবং ফালাকাটার এথেলবাড়িতে শিল্পতালুক তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। দু’টি শিল্পতালুকেরই চারপাশের প্রাচীরের কাজ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি ওই দু’টি শিল্পতালুকের জমি ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডকে (ডব্লুবিএসআইডিসিএল) হস্তান্তর করা হয়েছে। সমীক্ষা করে ডব্লুবিএসআইডিসিএল এখন প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরির কাজে হাত দিয়েছে।
জেলা শিল্প দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার বিভাস বসু বলেন, এখানে প্রস্তাবিত দু’টি শিল্পতালুকের জমিতেই সীমানা পাঁচিল তুলে আমরা ঘিরে দিয়েছি। আশা করি, ডব্লুবিএসআইডিসিএল দ্রুত উদ্যোগপতিদের এখানে নিয়ে এসে শিল্প গড়ার কাজ শুরু করবে।
জেলা শিল্প দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষুদ্র উদ্যোগীদের মধ্যে দু’টি শিল্পতালুকের জমি দ্রুত বিতরণের লক্ষ্যে ডব্লুবিএসআইডিসিএল প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করছে। ওই শিল্পতালুকে শিল্প কারখানা করতে চেয়ে ইতিমধ্যেই জেলা শিল্প দপ্তরে ৭৫ জন উদ্যোগপতি আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন। কোভিড-১৯ ও আনলক-৩ পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিরা চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। জেলায় শিল্পতালুক না থাকায় ইচ্ছে থাকলেও অনেকে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে ব্যবসায় নামতে ভরসা পারছিলেন না। সেজন্য জেলার ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীরা ২০১৭ সাল থেকে এখানে শিল্পতালুক তৈরির দাবিতে রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করে আসছিলেন। ২০১৮ সালে জেলার ওই দু’টি এলাকায় জমির বন্দোবস্ত করে প্রস্তাবিত শিল্পতালুক গড়ার কাজ শুরু হয়।
আলিপুরদুয়ার চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে বলেন, আমাদের আশা ছিল চলতি বছরেই জেলার নতুন শিল্পতালুকে ব্যবসায়ীরা জমি পাবেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে সব ভেস্তে গিয়েছে। একদিকে করোনা ও অন্যদিকে ব্যবসার জন্য জায়গা না থাকায় ব্যাঙ্ক ঋণও মিলছে না। তবে জেলায় দু’টি শিল্পতালুক তৈরি হচ্ছে। আশা করছি, এবার সমস্যা মিটবে।
এথেলবাড়িতে শিল্পতালুক তৈরির জন্য ৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জেলা শিল্প দপ্তর জানিয়েছে, এখানে চারপাশে প্রাচীর দেওয়ার জন্য ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। অন্যদিকে, জয়গাঁর গোপীমোহন চৌপথি এলাকায় জয়গাঁ হাসপাতালের পিছনে ১১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে শিল্পতালুক তৈরির জন্য। এই শিল্পতালুকে প্রাচীরের জন্য ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।
২০১৪ সালে জলপাইগুড়ি ভেঙে পৃথক জেলা হয়েছে আলিপুরদুয়ার। আলাদা জেলা হওয়ার ছ’বছরের মধ্যেই দু’টি শিল্পতালুক তৈরির কাজ চলছে। এ নিয়ে জেলার উদ্যোগপতিদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ, উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’টি শিল্পতালুকে জমি চেয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ৭৫ জন উদ্যোগপতি জেলা শিল্প দপ্তরে আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন।
জেলা শিল্প দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এথেলবাড়ি শিল্পতালুকে মূলত ফুড প্রসেসিং ও জয়গাঁয় অটোমোবাইল অনুসারী শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।