পর্যটকদের জন্য সুখবর! স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দীঘায় খুলছে একাধিক হোটেল
লকডাউনে স্তব্ধ ছিল সৈকত-সুন্দরী দীঘা। তারমধ্যেই বয়ে গিয়েছিল বিধ্বংসী উম-পুন। ধাক্কা কাটিয়ে ১জুলাই থেকে হোটেল-লজ খুলতে শুরু করেছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ হু-হু করে বাড়তে থাকায় পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায়। ফের একের পর এক হোটেলে ঝাঁপ পড়ে যায়। প্রায় কেউই মহামারীর ভয়ে দীঘামুখো হননি। বৃহস্পতিবার থেকে সেই ছবিটা কিছুটা বদলাতে শুরু করেছে। এদিন দুপুরের পর থেকে পর্যটকদের আনাগোনা কিছুটা বেড়েছে। হোটেল মালিকদের মুখে ফুটেছে হাসি। অনেকেই বলছেন, স্বাধীনতা দিবসের ছুটিই দীঘায় স্বস্তি এনেছে। মানুষের ভিড়ে প্রাণ ফিরে পেতে চলেছে সমুদ্র সৈকত।
দীঘায় এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশের বেশি হোটেল খোলা আছে। এদিন আরও বেশকিছু হোটেলে খুলেছে। তবে ১৪ ও ১৫ আগস্ট অনলাইনে ও ফোনে অনেক বুকিং হয়ে আছে। তাই আজ, শুক্রবার দীঘায় ভিড় বাড়বে। প্রতি বছর ১৫ আগস্টে দীঘায় পর্যটক গম গম করে। এবছর পরিস্থিতি অনেকটাই অন্যরকম। তাছাড়া এখনও ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। দীঘা সফরে বেশিরভাগ পর্যটক ট্রেন পছন্দ করেন। আপাতত সরকারি বাস চললেও অনেকেই আতঙ্কে তাতে উঠতে চাইছেন না। এই মুহূর্তে ১৪ জোড়া এসবিএসটিসি বাস দীঘা ডিপো থেকে যাতায়াত করছে। তবে, ১৫ আগস্ট পর্যটক সংখ্যা বেড়ে গেলে অতিরিক্ত বাস চালানো হবে বলে দীঘার ডিপো ইন-চার্জ দেবাশিস গিরি জানিয়েছেন।
১৫ আগস্ট মন্দারমণিতে দু’দিনের জন্য ফোনে বুকিং করেছেন বর্ধমানের আটজনের একটি টিম। সেই টিমে গুসকরা কলেজের অধ্যাপিকা তনুশ্রী সেনাপতি, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিস এগজিকিউটিভ সামসুল মণ্ডল প্রমুখ আছেন। তাঁরা বলেন, স্বাধীনতা দিবসে সপরিবারে মন্দারমণিতে কাটাব। আমরা চাই, করোনা মহামারীকে পিছনে ফেলে দ্রুত ছন্দে ফিরুক দীঘা, মান্দারমণি, তাজপুর। আশা করি, স্বাধীনতা দিবসের পর থেকেই দীঘায় পর্যটকদের যাতায়াত বাড়বে।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, আনলক পর্বেও দীঘায় পর্যটকদের দেখা নেই। অধিকাংশ হোটেল বন্ধ ছিল। এখন ধীরে ধীরে হোটেল খুলছে। পর্যটকরাও আসতে শুরু করেছেন। ১৫ আগস্ট উপলক্ষে ভিড় বাড়বে বলে আশা করছি। কারণ, বেশকিছু বুকিং আছে। ট্রেন চলাচল করলে ভিড় আরও বেশি হতো। তবে, প্রাইভেট গাড়িতে পর্যটকরা আসছেন। আমরা যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
এতদিন দীঘায় সেভাবে পর্যটক না যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন। পযর্টকদের উপর নির্ভর করে এলাকায় প্রচুর দোকান গড়ে উঠেছিল। পর্যটক না আসায় স্থানীয় লোকজনের উপর নির্ভর করেই সেই সব দোকান চলছে। বিক্রিবাটা ঠিকমতো হচ্ছে না। তাই অনেকেই নিয়মিত দোকানের ঝাঁপ খুলছেন। না। ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে তাঁরা ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় রয়েছেন।
মন্দারমণিতে শ’খানেক হোটেল আছে। তারমধ্যে প্রায় অর্ধেক হোটেল খুলে গিয়েছে। যেসব হোটেল খোলা, তার ৫০ শতাংশ রুম ফাঁকা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনার পরিস্থিতিতে সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখতেই এই নির্দেশ। ১৩-১৫ আগস্ট পর্যন্ত বেশকিছু বুকিং হয়েছে। বেশিরভাগ পর্যটক প্রাইভেট গাড়িতেই আসছেন। ১৪ ও ১৫ আগস্ট পর্যটক সংখ্যা আরও বাড়বে বলে হোটেল মালিকরা মনে করছেন। মন্দারমণি হোটেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবদুলাল দাসমহাপাত্র বলেন, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে বুকিং কিছুটা বেড়েছে।