পুজোর বাজেট বাঁচিয়ে রোগীদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনল এই ক্লাব
কোভিড যোদ্ধাদের সম্মান জানাতে আগেই বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই পুজো কমিটি। দুই উর্দিধারী সুরেলা পুলিশকর্মীকে দিয়ে পুজোর থিম সং গাওয়ানোর পরিকল্পনা আগেই নেওয়া হয়েছে। এবার এলাকার করোনা রোগীদের আপৎকালীন পরিষেবা দিতে এগিয়ে এল কেষ্টপুর প্রফুল্ল কানন (পশ্চিম) অধিবাসীবৃন্দ। আগে মানুষ বাঁচুক, তারপর পুজো। এই মন্ত্রেই পুজোর বাজেটে কাটছাঁট করে করোনা রোগীর সেবায় ব্রতী হতে চলেছে এই পুজো কমিটি। পুজোর বাজেটের টাকায় একের পর এক অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনছে ক্লাব। উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য, করোনা আবহে এলাকায় শ্বাসকষ্টে ভোগা মানুষের প্রাণ বাঁচাতে বিনামূল্যে দ্রুত অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া। করোনায় আক্রান্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে এই মহৎ কাজে নেমেছেন পুজোওয়ালারা।
পুজোর বাজারে এক অনন্য নজির গড়ল কেষ্টপুরের এই ক্লাব। পুজোর বাজেট কমিয়ে সেই টাকা দিয়ে অত্যাধুনিক তিনটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনেছে তাঁরা। আরও কেনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দু’টি সিলিন্ডার করোনা রোগীদের পরিষেবায় লেগেছ। বাড়িতে যদি কোনও মানুষের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, তিনি যদি করোনায় আক্রান্ত হন বা তাঁর যদি করোনার উপসর্গ যেমন তীব্র শ্বাসকষ্টে ভোগা, এমন মানুষ ক্লাবের নম্বরে ফোন করলেই সদস্যরা PPE, মাস্ক, গ্লাভস পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে পৌঁছে যাবেন সেই অসুস্থ মানুষের কাছে।
কেন এমন উদ্যোগ সেই সম্পর্কে ক্লাবের সম্পাদক রঞ্জিত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “পুজো সারাজীবনই হবে। পুজো এবারও হবে। কিন্তু পুজোর বাজেটে কাটছাঁট করে যদি করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়াতে পারে তাহলে তার থেকে মহৎ কাজ আর দ্বিতীয়টা হবে না। আমরা এখন ভাবছি মানুষের পুজোতে মানুষ আগে বাঁচুক। মানুষ বেঁচে থাকলে, মানুষ সুস্থ থাকলে পুজোও ভাল হবে। আমাদের ক্লাবের সাত জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। একজন বেলেঘাটা আইডিতে ভরতি হয়েছিলেন। বাকি সবাই বাড়িতে নিভৃতবাসে থেকে সুস্থ হয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকেই জানতে পারি, করোনা রোগীদের সবচেয়ে যেটা বেশি প্রয়োজন সেটা হল অক্সিজেন সিলিন্ডার। তাই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, শুধু অক্সিজেন সিলিন্ডারই নয়, ১০টি পালস অক্সিমিটার রয়েছে ক্লাবে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা দেখার জন্য সেগুলিও কাজে লাগানো হচ্ছে। ক্লাবের তরফ থেকে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। 9830862255 নম্বরটি ক্লাবের পুজো কমিটির সেক্রেটারি রুমন চন্দের। এই নম্বরে ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার। তাও একেবারে বিনামূল্যে।