এক টাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিন – পথ দেখিয়েছে বাংলা
দেশের শক্তির অর্ধাংশ নারীশক্তি। তাই নারীর সুস্বাস্থ্যের স্বার্থে ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লা থেকে একটি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি উদ্যোগে দেশের মা-বোনদের কাছে মাত্র ১ টাকায় স্যানিটারি প্যাড পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন নেটিজেনরা। সমস্ত বড় চ্যানেল এবং সংবাদপত্র ফলাও করে এই খবর প্রকাশ করেছে।
কিন্তু এই ক্ষেত্রে সবাই একটা বিষয় এড়িয়ে গেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে বাংলায় চালু হয়েছে ‘সাথী’ প্রকল্প। এর আওতায় বিগত ২০১৮ সাল থেকেই ছ’টাকায় ছ’টি প্যাড দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
মোদীর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার অধিকারী। কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না যে এই উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী নেওয়ার অনেক আগেই বাস্তবায়িত করে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বসানো হয়েছে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিনও।
স্থানীয় মহিলাদের নিয়ে গঠিত স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রাথমিক ভাবে এই প্যাডের উৎপাদন শুরু করেছিল। পুরুলিয়ার জয়পুর গ্রামে সমবায় দপ্তরের প্রশিক্ষণ ভবনে এর pilot project টি স্থাপিত হয় District Rural Development Cell (DRDC) আর UNICEF এর যৌথ উদ্যোগে। তিরিশ ছন প্রশিক্ষিত মহিলা কর্মী এক মাসে প্রায় নয়শটি প্যাড তৈরি করেন ।
স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর দ্বারা যখন পরবর্তীকালে প্যাডের সম্পূর্ণ চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাইরে থেকে কিনে subsidised rate এ তা দেবার ব্যবস্থা করেছে। West Bengal Medical Services Corporation Limited (WBMSCL) এর portal থেকে e tendering এর মাধ্যমে সাথী প্রকল্পের জন্য প্যাড কেনা হয়েছে। Tender notice গুলিতে কোন জেলায় কতটা প্রয়োজন পরিষ্কার ভাবে তা নথিভুক্ত করা আছে।
কিন্তু তাঁর এই মহৎ উদ্যোগ সেভাবে কখনোই আসেনি প্রচারের আলোয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর আবারও প্রমাণ হল, বাংলা আজ যা ভাবে, সারা দেশ কাল তা ভাবে।