কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

দমদমের এই পুজো কমিটিগুলোর এবার প্রার্থনা করোনা মুক্তি

August 17, 2020 | 2 min read

করোনা আবহে মা আসছেন। ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই বাজতে শুরু করেছে আগমনী বার্তার সুর। খুঁটিপুজার মধ্যে দিয়ে পুজোর ঢাকে যেন পুরোদস্তুর কাঠি পড়ে গেল। বাজেটে কাটছাঁট হলেও পুজো হচ্ছে, এটা নিশ্চিত করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার দিকেই এবার বেশি নজর।

স্বাধীনতা দিবস এলেই খুঁটিপুজো, হোর্ডিং দেওয়া, মণ্ডপের জন্য বাঁশ চলে আসা— বরাবরের চেনা ছবি। রবিবার খুঁটিপুজো করে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক তোড়জোড় শুরু করে দিল শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হল। সেলিব্রিটিরা গরহাজির। সীমিত সংখ্যক মানুষকে নিয়েই হল খুঁটিপুজো। এবার কেদারনাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। প্যান্ডেল, প্রতিমা নিয়ে বরাবরই শ্রীভূমির পুজো দর্শকদের নজর কাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। তবে করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে মণ্ডপে প্রবেশ করতে হবে দর্শনার্থীদের। মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধি। পুজোর উদ্যোক্তা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, এক লক্ষ মাস্ক বিতরণ করা হবে। স্যানিটাইজার দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে। আর পুজোর অর্থ বাঁচিয়ে সামাজিক কাজ করা হবে। শ্রীভূমির পুজোয় প্রতি বছর দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। এবার ভিড় নিয়ন্ত্রণের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘরে বসে যাতে পুজোর আনন্দ উপভোগ করা যায়, সেরকমই পরিকল্পনা করেছেন শ্রীভূমি’র কর্মকর্তারা। সুজিতবাবু বলেন, গত বছরের পুজোর থিম সং ইউটিউবে ইতিমধ্যে এক কোটির উপর দর্শক দেখেছেন। ফলে এবার পুজোর সামগ্রিক পরিবেশ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে আম্পান। ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প নিয়েছে দমদম তরুণ দল। পুজোর বাজেটের একটা বড় অংশ প্রান্তিক মানুষের সেবায় ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুজো কমিটির কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ প্রসাদ বলেন, উত্তর ২৪ পরগনার একটি গ্রামে ২৮৮টি পরিবার রয়েছে। পরিবারের সব সদস্যদের পাশে দাঁড়ানোই এবারের পুজোর সার্থকতা বলে মেনে করি। তাঁদের জামাকাপড়, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া ট্রেন বন্ধ থাকায় রেলওয়ে হকাররা দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। তাই ২২ আগস্ট খুঁটিপুজার দিন ১০ জন হকারের হাতে সাম্মানিক অর্থ তুলে দেওয়া হবে। দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘও এবার পুজোর যাত্রা শুরু করেছে করোনা যোদ্ধাদের কুর্নিশ জানিয়ে। ১৫ আগস্ট চিকিৎসক, নার্স, সাফাই কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালক, পুলিসকে সম্মান জানিয়ে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করা হয়। রবিবার হয়েছে খুঁটিপুজো। পুজো কমিটির সভাপতি রবীন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ভিড় এড়ানোর জন্য খোলামেলা পরিবেশে মণ্ডপ হবে। করোনা পরিস্থিতির বর্তমান সময়কে তুলে ধরে মুক্তির আলো ফুটিয়ে তুলবেন শিল্পী। বাইরে থেকেই মণ্ডপ, প্রতিমা দর্শন করা যাবে।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে দমদম পার্ক ভারতচক্র। ২৩ আগস্ট খুঁটি পুজো দিয়ে তাদের পুজোর প্রস্তুতি শুরু হবে। কর্মকর্তা প্রতীক চৌধুরী বলেন, এবার আড়ম্বর কম থাকবে। মণ্ডপে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য চওড়া জায়গা থাকবে। স্যানিটাইজেশন টানেলের সঙ্গে প্রতিদিন মণ্ডপ চত্বরে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হবে। প্রত্যেক স্টলের দূরত্ব থাকবে ৬ ফুট। খোলামেলা স্ট্রাকচার হবে। এলইডি স্ক্রিনে দূর থেকে যাতে মানুষ প্রতিমা দর্শন করতে পারেন তার ব্যবস্থা হবে।

দমদমের তিন পুজো কমিটি আগে যে থিমের পরিকল্পনা করেছিল করোনার জেরে তা বদলাতে হয়েছে। বাজেট বড়সড় কাটছাঁট করেছে। পুজোয় একত্রিত হয়ে এবার খাওয়া-দাওয়ার পর্ব একেবারেই বন্ধ। কমানো হচ্ছে স্টলের সংখ্যা। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে চলছে পুজো। রয়েছেন মন্ত্রী সুজিত বসু।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Coronavirus, #durga Pujo, #Sujit Basu

আরো দেখুন