কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

করোনার জের, অনলাইনে বইমেলার আয়োজনের চিন্তা

August 18, 2020 | 2 min read

আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ঘিরে এবার চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। সৌজন্যে মারণ করোনা। ২০২১ সালে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ৪৫তম বইমেলার সূচনা হওয়ার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবেশী বাংলাদেশকে ‘থিম কান্ট্রি’ হিসেবে নির্বাচিতও করা হয়েছিল। পাশাপাশি বিশ্বের ১৭টি দেশ এবং ভারতের অধিকাংশ রাজ্যের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে পুরোটাই অনিশ্চিত। নবান্ন সূত্রের দাবি, বইমেলায় প্রতিদিন গড়ে এক লাখ দর্শক আসেন। করোনার এই সঙ্কটময় মুহূর্তে আগের মতো বইমেলার অনুমতি দেওয়া অসম্ভব। পরিস্থিতির বিরাট উন্নতি না হলে বইমেলা আদৌ করা যাবে কি না, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে।

সূত্রের দাবি, আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে। সেখানেও কেউ আশার কথা শোনাতে পারেননি। জানা গিয়েছে, জুলাই-আগস্টের মধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রকাশকদের কাছে গিল্ডের তরফে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেপ্টেম্বর থেকে মেলার মাঠের পরিকাঠামো, স্টল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু করোনার জেরে গোটা প্রক্রিয়াটাই বন্ধ। এ প্রসঙ্গে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। এই সময়ের মধ্যে আমরা বইমেলার বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি সেরে ফেলি। কিন্তু বর্তমানে তা করা সম্ভব হচ্ছে না। বইমেলার সঙ্গে পুস্তকপ্রেমী তথা বাংলার মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তবে করোনা ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ববিধির গেরোয় বইমেলা চেনা ছন্দ হারাতে পারে। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব। প্রশাসনের নির্দেশ মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, গত বছর ১২ দিনের মেলার ২৫ লাখেরও বেশি দর্শক সমাগম হয়েছিল। সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে আয়োজিত মেলায় প্রায় ২৩ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। গতবছর দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৬৪০টি স্টল হয়েছিল। পাশাপাশি ২০০-র মতো লিটল ম্যাগাজিনের স্টল ছিল।

এই প্রসঙ্গে প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা জানান, অধিকাংশ বিদেশি প্রকাশনা সংস্থা আগামী বছরের বইমেলায় আসতে চাইছে না। গত বছর বিদেশি সংস্থাগুলির জন্য মাঠের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গ ফুট জায়গা ছাড়া হয়েছিল। পাশাপাশি বিরাট আকারের ফুড কোর্টও তৈরি করা হয়েছিল। এবার যদি বিদেশি সংস্থাগুলি না আসে এবং ফুড কোর্ট একটু ছোট করে দেওয়া যায়, তাহলে সেই জায়গা ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে স্টলের সংখ্যা অনেকটা কমিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে তা তৈরি করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে আরও একটি পরিকল্পনা করেছি। আমরা চাইছি, বইমেলায় অংশ নেওয়া প্রত্যেক প্রকাশকের বইয়ের সম্ভার সম্পর্কে তথ্য ডিজিটাল মাধ্যমে তুলে দিতে, যাতে পুস্তকপ্রেমীরা অ্যাপে কিংবা অনলাইনে তার বিশদ বিবরণ জানতে পারেন। তারপর তাঁরা পছন্দের বই ডিজিটালি বুক করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে গিল্ড কিংবা প্রকাশকের তরফে সেই বই পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata Book Fair, #Coronavirus, #online

আরো দেখুন