দেশ বিভাগে ফিরে যান

চলতি মাসেই ঋণ পাবেন এক লক্ষ হকার

August 18, 2020 | 2 min read

লকডাউনে বিপদে পড়েছিলেন হকাররা। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে আত্মনির্ভর নিধি নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যার অধীনে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন হকাররা। চার মাস পর অবশেষে সেই ঋণ পেতে চলেছেন হকাররা। চলতি মাসের শেষের দিকে রাজ্যে প্রকল্পটির সূচনা হওয়ার কথা। প্রথম ধাপে এক লক্ষ হকারকে এই ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হকারদের এই ঋণ দেওয়ার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। ঘোষণা অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও এই ঋণ দেবে। সুদের হারে ৭ শতাংশ ভর্তুকি দেবে সরকার। সময়ের আগে শোধ এবং ডিজিটাল পেমেন্ট করলে অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা মিলবে। স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে (সিডবি) ওই বিষয়ে নোডাল এজেন্সি নিয়োগ করেছে কেন্দ্র। গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ হকারকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ঋণের অনুমোদন মিলেছে পাঁচ লক্ষ হকারের। তবে পশ্চিমবঙ্গে তা এখনও চালু হয়নি।

নিয়ম অনুযায়ী, কারা ঋণ পাবেন, তা খতিয়ে দেখতে পুরসভাগুলির তরফে একটি কমিটি গঠন করার কথা। সেখানে হকারদের তরফেও প্রতিনিধি থাকবেন। কমিটি হকারদের তালিকা পাঠালে ব্যাঙ্ক উদ্যোগ নেবে। পশ্চিমবঙ্গে কমিটি তৈরি না হওয়ায় এব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে হকার সংগঠন। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রও এই প্রকল্পে ন্যাশনাল হকার ফেডারেশনের উপর নির্ভর করছে কেন্দ্র। সেই সংগঠনের অংশ হিসেবে এখানে উদ্যোগ নিয়েছে হকার সংগ্রাম কমিটি।

হকার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ বলেন, হকাররা সাধারণত ব্যাঙ্কে যেতে চান না। তাঁরা চড়া সুদে মহাজনদের থেকে টাকা ধার করতেই অভ্যস্ত। এক্ষেত্রেও তাঁরা ব্যাঙ্কে যেতে রাজি হচ্ছেন না। পাশাপাশি, ব্যাঙ্কে প্রতি মাসে কিস্তির টাকা শোধ করার কথা। আমাদের ধারণা, মাস শেষে হাজার খানেক বা তারও বেশি টাকা শোধ করতে পারবেন না অনেকেই। অথচ প্রত্যেকেরই এই সময় টাকার দরকার। ন্যাশনাল হকার ফেডারেশন এই বিষয়ে একটি সমাধানসূত্র সামনে এনেছে। তারা নিজেরাই একজন করে এজেন্টকে কাজে লাগাচ্ছে। যাঁরা অন্তত হাজার খানেক হকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং প্রতি সপ্তাহে কিস্তির টাকা আদায় করবেন। এতে হকারদের উপর আর্থিক চাপ পড়বে না এবং ব্যাঙ্কও সঠিক সময়ে টাকা ফেরত পাবে। পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা শোধ করলে, সরকার ‘ক্যাশব্যাক’ বা নগদ ছাড় দেবে। সেই সুযোগও হকাররা পাবেন। কলকাতা তো বটেই, গোটা রাজ্যে হকারদের এই স্কিমটি বোঝাতে ক্যাম্প করা হচ্ছে। সেখানে থাকছেন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি বা বিজনেস করেসপন্ডেন্টরা। তাঁরা ক্যাম্প থেকেই ব্যাঙ্কিং অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ঋণের দরখাস্ত জমা নিচ্ছেন। ন্যাশনাল হকার ফেডারেশনের আঞ্চলিক সংগঠন হিসেবে হকারদের শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে হকার সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে। প্রমাণ হিসেবে সেই শংসাপত্র আপলোড করা হচ্ছে ব্যাঙ্কের অ্যাপে।

শক্তিমানবাবু আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা খবর নিয়েছি, বেশ কয়েকজন হকারের ঋণ অনুমোদন পেয়েছে। রাজ্যের নগরোনন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আগামী ২৬ আগস্ট সেই ঋণ হকারদের হাতে তুলে দেবেন। দেশজুড়ে প্রথম পর্যায়ে ২০ লক্ষ হকারকে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আমরা এক লক্ষ হকারকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পটি চলবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#loan, #hawkers, #Narendra Modi

আরো দেখুন