বন্ধ হওয়ার মুখে বসুশ্রী সিনেমা হল
পথের পাঁচালী, অপরাজিত, সোনার কেল্লা, অযান্ত্রিকের মত সিনেমার প্রিমিয়ার আয়োজন করা ৭২ বছরের বসুশ্রী সিনেমা হল বন্ধ হতে চলেছে। এখন মালিক কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে জয়েন্ট ভেঞ্চারের। এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে সরকারের অনুমতি পাওয়ার পরেও এই সিনেমা হল খোলার সম্ভাবনা কম।
আরেক সিনেমা হল প্যারাডাইসের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ১লা আগস্ট থেকে নোটিশ দিয়ে বন্ধ হয়েছে। বসুশ্রীর ছ’জন মালিকের একজন মালিক বলেন, আমরা এরকম কোনও নোটিশ আপাতত দিইনি। তবে, পরিস্থিতি ভালো না।
১৯৪৭ সালের ১৯শে ডিসেম্বর সত্যভূষণ বসু বসুশ্রী হল চালু করেন। এম এস শুভলক্ষ্মীর মীরা, উদয় শঙ্করের কল্পনা, পথের পাঁচালী এখানে দেখানো হয় ১৯৫৫ সালে। সত্যজিৎ রায়কে এখানে সম্মানিত করা হয় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়ের উপস্থিতিতে।
সত্যভূষণ বসুর উত্তরসূরি মন্টু বোস এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু করেন। এখানে অনুষ্ঠান করেছেন লতা মঙ্গেশকর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, এস ডি বর্মন, সন্ধ্যা মুখোপাদ্ধ্যায় প্রমুখ। এখানে পয়লা বৈশাখের আড্ডায় উপস্থিত হতেন উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রায়, পাহাড়ি সান্যাল, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়, রবি ঘোষের মত ব্যক্তিত্বেরা। ডিসেম্বরে এখানে রাত্রিব্যাপী অনুষ্ঠান হত পণ্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ আল্লারাখার মত শিল্পীদের নিয়ে।
এক মালিক বললেন, বর্তমানে এখানে ব্যবসা মন্দা। মানুষ সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল বন্ধ হলে দুঃখ পান কিন্তু এখানে টিকিট কেটে সিনেমা দেখেন না। ইলেকট্রিক, রক্ষণাবেক্ষণ বাদ দিয়ে পুরসভাকে বছরে ৬.৭৫ লক্ষ টাকা দিতে হয়। অতিমারির আগে পর্যন্ত ১০৩০ আসনবিশিষ্ট এই হলে খুব বেশী হলে ২০০ টিকিট বিক্রি হতো প্রতি শোতে।
বিদেশী সিনেমা দেখিয়েও এখানে জনতার আসা বাড়েনি। লকডাউন ছিল কফিনের শেষ পেরেক। আমরা অন্য আয় থেকে কর্মচারীদের অর্ধেক বেতন দিয়েছি। এটা অনির্দিষ্টকাল চলতে পারেনা। কর্মচারীর সংখ্যা ৫০ থেকে কমে ২৫ হয়েছে। সাফাই কর্মী ১২ থেকে কমে ১।