বিশ্বভারতী ঘটনার তদন্তে ইডি, বাড়ছে জল্পনা
গার্ডেনরিচের পর বিশ্বভারতী। গত মার্চ মাসে ত্রাণ বিলিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গোলমালের ঘটনায় শাসকদলের দুই কাউন্সিলর-সহ সাতজনের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ভাবে মামলা রুজু করেছিল কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ওই মামলায় ইতিমধ্যে দুই কাউন্সিলর-সহ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমনও পাঠিয়েছে ইডি। তাদের দাবি ছিল, ওই গোলমালে যে অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তার উৎস জানতেই মামলা করা হয়। এ বার বিশ্বভারতীতে পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল ভাঙা ঘিরে তাণ্ডবেও অনুসন্ধান শুরু করল ইডি।
কেন ইডির এই সক্রিয়তা?
সোমবার মেলার মাঠে নির্মীয়মাণ পাঁচিল ভাঙতে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তার আগে মেলার মাঠ বাঁচানোর দাবিতে একটি মঞ্চ তৈরি হয়েছিল। সেই মঞ্চের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লোকজনকে আসতে বলা হয়। ফলে যে বিপুল সংখ্যায় মানুষ জড়ো হয়েছিলেন, তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে জড়ো হয়েছিলেন নাকি টাকা দিয়ে লোক জড়ো করার ব্যবস্থা হয়েছিল, তা জানতে চাইছে ইডি। যদি টাকাই ছড়ানো হয়ে থাকে, তা হলে তা ব্যক্তিগত স্তরে নাকি নেপথ্যে কোনও সংগঠনের হাত ছিল, তাও জানার চেষ্টা করবে তদন্তকারী সংস্থাটি।
বিশ্বভারতীয় ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বভারতীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিধায়ক, বিদায়ী কাউন্সিলর-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা। বিশ্বভারতীয় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও দায়ের করা হয়েছে মামলা। এ ছাড়া স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সেই পাঁচটি মামলার এফআরআইয়ের কপি-সহ অন্যান্য নথি চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং বীরভূমের পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছে ইডি। নথি চাওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীর কাছেও। তা খতিয়ে দেখে এবং অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলা রুজু করতে পারে ইডি। যদিও এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের কারও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
কিন্তু এ ধরনের আইনশৃঙ্খলাজনিত গোলমালের ঘটনায় ইডির সক্রিয়তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। গার্ডেনরিচে গোলমালের ঘটনায় ইডি তদন্ত শুরু করার পরেও এই প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ, বেআইনি কোনও আর্থিক তছরুপের (মানি লন্ডারিং) অভিযোগ পেলে তবে সাধারণত তদন্ত করে ইডি। গার্ডেনরিচ বা বিশ্বভারতীর মতো ঘটনায় ইডির মামলা করার নজিরে অতীতে বিশেষ নেই।