৮৫৮ জনকে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ কলকাতা পুরসভার
একদিকে করোনার প্রকোপ, অন্যদিকে বর্ষায় ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের ভ্রুকুটি। প্রাণঘাতী সব রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রথম শর্ত—শহরের আনাচকানাচ সাফসুতরো রাখা। সেই লক্ষ্যে এবং তিলোত্তমার সৌন্দর্যায়নে গতি আনতে গ্রুপ-ডি সমতুল পদে ৮৫৮ জনকে নিয়োগ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার অধীনে থাকা ১৪৪টি ওয়ার্ডকে আরও বেশি করে জঞ্জালমুক্ত রাখতে কাজ করবেন এই কর্মীরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এই নিয়োগ হবে। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে কমিশনের ওয়েবসাইট (www.mscwb.org) গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। মূলত মজদুর নিয়োগের এই প্রক্রিয়ায় সুনির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতামান নেই। বাংলা-ইংরেজিতে লিখতে ও কথা বলতে সাবলীল হলেই পরীক্ষায় বসার ছাড়পত্র মিলবে। সব মিলিয়ে করোনা আবহে রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এ এক সুবর্ণ সুযোগ।
করোনা ও উম-পুনের জোড়া বিপর্যয়ে চাপ বেড়েছে রাজ্যের কোষাগারে। কিন্তু নাগরিকদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে কোনওরকম আপসে রাজি নয় সরকার। তাই সাড়ে আটশো বেকারকে চাকরি এবং মহানগরকে পরিচ্ছন্ন রাখার যুগ্ম লক্ষ্যে এমন সঙ্কটময় মুহূর্তেও জনমুখী সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, মজদুর নিয়োগের জন্য প্রথমে একটি লিখিত পরীক্ষা হবে। সফল প্রার্থীদের ডাক পড়বে চূড়ান্ত ইন্টারভিউতে। নির্বাচিত মজদুররা রাজ্যের গ্রুপ-ডি পদমর্যাদার কর্মীদের সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। সংশ্লিষ্ট পদের কাজও সুনির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে। এরা কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই করবে। সকালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করা, তা স্থানীয় ভ্যাট কিংবা কমপ্যাক্টরে জমা করার পাশাপাশি রাস্তা সাফাইয়ের কাজেও নামানো হবে এই মজদুরদের।
জানা গিয়েছে, ১ জানুয়ারি, ২০২০ সাপেক্ষে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তবে নির্দিষ্ট জনজাতির জন্য সরকারি বয়সের ছাড় রয়েছে। অর্থাৎ রাজ্যের তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য পাঁচ বছরের ছাড়। পাশাপাশি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য তিন বছরের ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর ধার্য করেছে কমিশন। এ প্রসঙ্গে পুরদপ্তরের এক কর্তা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন মূলত রাজ্যের সমস্ত পুরসভা এবং পুর নিগমে নন-গ্রুপ কর্মী নিয়োগ করে। কিন্তু এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করার দায়িত্ব দিয়েছে কমিশনকে। আমরা চাইছি, এ বছরের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে। মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের এক প্রতিনিধির দাবি, লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রার্থীরা কীভাবে প্রস্তুতি সারবেন, তা জানানো হবে। কমিশনের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া থাকবে। সব মিলিয়ে মহানগরীর রূপটানে বাড়তি যত্ন নিতে কলকাতা পুরসভার এই উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে বিভিন্ন মহলের।