উত্তরবঙ্গে লকডাউনের নির্দেশিকা না মানায় গ্রেপ্তার বহু
লকডাউনের জেরে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলা কার্যত গৃহবন্দি রইল। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ারে সর্বত্রই দোকানপাট খোলেনি। বাজারও বন্ধ ছিল। রাস্তায় যানবাহনও তেমন চলেনি। তাই রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের ছবিটাও ছিল একই রকম। তবে লকডাউন কার্যকরী করতে সর্বত্রই তৎপর ছিল পুলিস। তারা লকডাউন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তারের সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। আজ, শুক্রবারও লকডাউনে পুলিস এমন পদক্ষেপ নেবে বলে জানা গিয়েছে।
করোনা সংক্রমণের চেন ভাঙতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে লকডাউন কার্যকরী করতে বুধবার রাতেই প্রস্তুতি নেয় শিলিগুড়ির পুলিস কমিশনারেট। তারা শহরের হিলকার্ট রোড সহ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড বসিয়ে নাকা চেকিং শুরু করে। বিনাকারণের রাস্তায় বের হওয়ায় এবং মাস্ক না পরায় তারা ১২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এদিন শহরের প্রতিটি বাজার, দোকান, শপিংমল বন্ধ ছিল। বিকেলের পর অনেকে মহানন্দা নদীতে মাছ ধরেছে।
ডেপুটি পুলিস কমিশনার (সদর) জয় টুডু বলেন, আইন অনুসারে লকডাউন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সঙ্গে মাস্ক থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার না করায় কোচবিহারের কয়েকজনকে কান ধরে উঠবস করান প্রশাসনের এক আধিকারিক। বিনা কাজে বের হয়েছেন এমন কয়েকজন বাড়িতে ফেরত পাঠান। এদিন কোচবিহারে ভবানীগঞ্জ বাজার, কাছারি মোড়, হরিশ পাল চৌপথি, দাস ব্রাদার্স মোড়ে কোনও ভিড় ছিল না। জেলার দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা ও মেখলিগঞ্জেও হাটবাজার বন্ধই ছিল। যানবাহন চলাচল করেনি। কোচবিহারের পুলিস সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, জেলায় লকডাউন ভঙ্গ করার অপরাধে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জলপাইগুড়িতেও লকডাউন পালন করতে সকাল থেকে তৎপর ছিল পুলিস। এদিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিস দিনবাজার, কদমতলা, হাসপাতাল রোড সহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিসের তাড়া খেয়ে কয়েকজন লকডাউন ভঙ্গকারী নদীতে ঝাঁপ দেন। জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার প্রবীরকুমার যাদব বলেন, লকডাউন উপক্ষা করায় মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লকডাউনের দিন আলিপুরদুয়ারবাসী কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন। তবে লকডাউন ভঙ্গ করে রাস্তায় বের হওয়ার জন্য পুলিস ফালাকাটা, কুমারগ্রাম, আলিপুরদুয়ার, জেলা সদর, মাদারিহাট, বীরপাড়া ও কালচিনি থেকে মোট ৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই মোটর বাইক ও সাইকেল আরোহী। এদিন আলিপুরদুয়ারের চা বাগান বাদে জেলার শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে রাস্তাঘাট, হাট বাজার সর্বত্রই শুনশান ছিল। আলিপুরদুয়ারের পুলিস সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, লকডাউন জানার পরেও বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়ার জন্য গোটা জেলা থেকে ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লকডাউনে কোথাও কোনও গণ্ডগোলের খবর নেই।