ছোটপর্দায় এবার পাণ্ডব গোয়েন্দা
এবার এই কিশোর গোয়েন্দার গল্প আসতে চলেছে টেলিভিশনের পর্দায়। একটি বেসরকারি চ্যানেলের তরফে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোমোও দেখানো শুরু হয়েছে। আর সেটা দেখেই দর্শকদের অনেকের আশঙ্কা টেলিভিশনের ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ বইয়ের পাতা থেকে আলাদা হবে না তো? আর পাঁচটা ধারাবাহিকের মতো, এখানেও রোমান্স ঢুকে পড়বে না তো? আসলে কিশোর উপন্যাসের চরিত্রগুলোর বয়স সিরিয়ালে যে বেড়ে গিয়েছে, তা প্রোমো থেকেই স্পষ্ট। তাই এই সব প্রশ্ন নেট দুনিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
অবশ্য ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’কে পর্দায় নিয়ে আসার প্রচেষ্টা বহুদিনের। ষষ্ঠীপদবাবু বলছিলেন, ‘প্রথমে প্রযোজক রানা সরকার ছবি করার জন্য পাঁচ বছরের মেয়াদে পাণ্ডব গোয়েন্দার স্বত্ব কিনেছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এই সময়ের মধ্যে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের তরফে পাণ্ডব গোয়েন্দা নিয়ে কাজ করার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তখন তো পাঁচ বছর পূর্ণ হয়নি। তাই তাঁদের স্বত্ব দিতে পারিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাঁচ বছর পূর্ণ হয়। গত জুলাই মাস নাগাদ রানা সরকার টেলিভিশনে কাজ করার জন্য ফের গল্পগুলির স্বত্ব কিনে নেন।’ এদিকে রানা সরকারের কাছ থেকে ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র টেলিভিশনের স্বত্ব কিনে নিয়েছেন প্রযোজক শিবাজি পাঁজা।
এখন চ্যানেলে শিবাজি পাঁজার স্ত্রী অভিনেত্রী বুলবুলির প্রযোজনা সংস্থা মহাবাহু মোশন পিকচার্স ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ প্রযোজনা করবে। টেলিভিশনে ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’ পরিচালনা করছেন রাহুল মুখোপাধ্যায়। ষষ্ঠীপদবাবুর বক্তব্য, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোমো দেখার পর আমাকে অনেকেই ফোন করছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে সবাই নাকি জানতে পেরেছেন, টেলিভিশনে রোমান্স দেখানো হবে বলেই চরিত্রগুলির বয়স বাড়ানো হয়েছে। এখন টেলিভিশনে কিছু দেখালে সেখানে তো আমি কিছু করতে পারব না। তবে, আমি সকলকে অনুরোধ করব, এতকাল বাঙালি চরিত্রগুলিকে যেভাবে দেখে এসেছে, সেভাবেই সিরিয়ালে রাখা হোক।’
এ প্রসঙ্গে প্রযোজক শিবাজি পাঁজার স্পষ্ট বক্তব্য, ‘গল্পগুলো আজ থেকে ৩০ বছর আগে লেখা। তখনকার সমস্যাগুলো এখন বদলে গিয়েছে। সেই জায়গাগুলো সময়োপযোগী করে তোলা হয়েছে। ষষ্ঠীপদবাবুর লেখার মধ্যেও কিন্তু কিশোরকালের প্রেমের বিষয়টা আছে। রোমান্সের বিষয়টা আমাদের এখানে খুবই অল্প।’ প্রোমো দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে, চরিত্রগুলির বয়স অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে শিবাজির যুক্তি, ‘আমাদের দেশে ২১ বছর না হলে কেউ বন্দুক ব্যবহার করতে পারে না। কিন্তু গল্পে তার থেকে কম বয়সি একজনের হাতে বন্দুক রয়েছে। তাই আমাকে বাবলুর বয়স বাড়াতেই হয়েছে। সেই সূত্রে বাকি চরিত্রগুলির বয়সও বেড়েছে। তবে লেখকের গল্পের এসেন্স নষ্ট হতে দিইনি।’
নিঃসন্দেহে বইয়ের পাতার চরিত্র টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে মন্দ লাগে না। সেটা একেবারেই আলাদা উত্তেজনা। যখন বিষয়টা ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র মতো গল্প নিয়ে হয়, তখন তো কথাই নেই। এখন সেটা কতটা সার্থক হল, সেটা সময় বলবে।