দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

“একুশে বিজেপি জঙ্গলমহলে দাঁত ফোটাতে পারবে না” অকপট ছত্রধর

August 23, 2020 | 2 min read

২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত লালগড় আন্দোলনের মুখ ছিলেন ছত্রধর মাহাত। তিনি যখন কারাবন্দি হয়েছিলেন তখন রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন সপ্তম বামফ্রন্ট সরকার। ১১ বছর কারারুদ্ধ থাকার পর মাত্র মাস কয়েক আগে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। আর ছাড়া পাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য স্তরের কমিটিতে মিলেছে ঠাঁই।

ছত্রধর মাহাত মুখোমুখি হয়েছিলেন দৃষ্টিভঙ্গির। প্রথম পর্বটি পড়ুন এখানে। রইল তাঁর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব:

দৃষ্টিভঙ্গি: কয়েকদিন আগে আমরা দেখেছি যে দলের সভায় আপনি বলেছেন, মানুষ কিছুটা হলেও সরে গেছে দল থেকে তাই লোকসভায় ফল খারাপ হয়েছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মানুষকে আবার কিভাবে ফিরিয়ে আনবেন?

ছত্রধর: এটা পার্টির আভ্যন্তরীণ বিষয়। সবটা আমি একাই নয়, পার্টিও নিশ্চই ভাববে। গত লোকসভাতে জঙ্গল মহলের মানুষ যেভাবে তৃণমূলের বিপক্ষে গেছে, সেই জায়গা থেকেই আমি এই কথাটা বলেছি। এটাও বলছি, তাদের যাওয়ার যে মূল কারণ, এরা উন্নয়ন করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভুলে গেছে। সাধারণ মানুষের সাথে সমন্বয় হারিয়েছে। তাই বিজেপির মতো অশুভ, বিভেদকারী শক্তি, তারা সেই সুযোগে জঙ্গল মহলের মানুষকে প্রলোভন দেখিয়েছে। বর্তমান নেতৃত্ব যদি আবারো জনগণের সাথে একাত্ব হতে পারেন, তাদের কাছে যেতে পারেন, মানুষের সাথে থাকেন, তাহলে ২০১১ সালের মতো, ২০২১ সালেও এলাকার মানুষ মমতা বন্দোপাধ্যায়কে আশীর্বাদ করবেন। আমি এই আশা রাখি। এখানে বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারবে না।

দৃষ্টিভঙ্গি: আগে আপনার লড়াই ছিল বাম শক্তির বিরূদ্ধে। এখন বিজেপি, সিপিএম দুই একসাথে। কিভাবে  মোকাবিলা করবেন?

ছত্রধর: সিপিএম, বিজেপির মধ্যে কোন বিভেদ নেই। একসময় পশ্চিম বাংলায় ছিল লাল, এখন হয়েছে গেরুয়া। যারা সিপিএম ছিল, তারাই এখন বিজেপিতে এসেছে। আজ নেতৃত্বরা কলকাতায় বসে যতোই বলুক আমরা ভুল স্বীকার করে জনগণের কাছে যাব। কিন্তু আসলে তাদের কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছে ভুল স্বীকার করতে পারে না। এমন কিছু কাজ করেছে, যা স্বীকার করার ক্ষমতা নেই এদের।

সূর্য বাবুদের চুপচাপ থাকাই ভালো। তাদের পুরো দল চলে গেছে বিজেপির কাছে, দিলীপ বাবুর কাছে। যে দিলীপ বাবু গরুর দুধেও সোনা দেখতে পায়, বলেন পাপড় খেলে করোনা দূর হয়। যে দলের কোন কর্ম সূচী নেই, যে দলের কোন ভীত নেই, তারা আদিবাসীদের কয়েকদিনের জন্যে ভুলিয়ে রেখেছিল। আর ভোলানোর জায়গা নেই। তারা কাতারে কাতারে আবার তৃণমূলের ছত্রছায়ায় আসছে। কাল লালগড়ে আমার উপস্থিতিতে ২৫০ জন তৃণমূলে ফিরেছেন।

দৃষ্টিভঙ্গি: অপনেন্ট হিসেবে সূর্য বাবু না দিলীপ বাবু কাকে বেশি শক্তিশালী মনে করছেন। কাদের কাছে জনগণ বেশি অসহায়?

ছত্রধর: পশ্চিম বাংলায় বিরোধীদের কোন অস্তিত্বই নেই। যে সমীকরণে এরা হাঁটছে, কেউই দ্বিতীয় জায়গায় আসার মতো অবস্থায় নেই।

দৃষ্টিভঙ্গি: কিন্তু শেষ লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা যদি ঝাড়গ্রামের দিকে তাকাই, তৃণমূল কংগ্রেস হেরেছিল। যে চারটি জায়গার কথা জানি, অর্থাৎ ঝাড়গ্রাম, বিনপুর, গোপীবল্লভপুর এবং নয়াগ্রাম। আসন্ন নির্বাচনে কি তৃণমূল জিতবে, বা জেতাটা কি সহজ হবে?

ছত্রধর: অবশ্যই জিতবে। তারা আদিবাসী মানুষকে পয়সাকড়ি দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে সাময়িকভাবে ভুল পথে চালনা করতে পেরেছিল। আজ মানুষ বুঝেছে। কাতারে কাতারে মানুষের ফেরা এবং উপনির্বাচনের ফল থেকেই এটা প্রমাণিত। লোকসভা ভোটে মানুষ যেভাবে বিজেপিকে আশীর্বাদ করেছিল, একইভাবে ২০২১-এ তাদের ছুড়ে ফেলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মা মাটি মানুষের সরকারকে তারা আশীর্বাদ করবেন।

(সমাপ্ত)

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#jangalmahal, #Chhatradhar Mahato

আরো দেখুন