দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বহিরাগত বলায় বিতর্কে জড়ালেন উপাচার্য

August 23, 2020 | 2 min read

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে তাঁর লেখা সাতপাতার একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ডের পর উপাচার্য প্রথমবার নিজের মত প্রকাশ করলেন। যদিও তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এদিন শান্তিনিকেতনে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত দাবি করেন, পরিবেশ আদালতের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করেছে বিশ্বভারতী।
রাবীন্দ্রিক হিসেবে বহিরাগতদের কোনও স্থিতাধিকার নেই, এই অভিযোগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে উপাচার্য লিখেছেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে বহিরাগত ছিলেন। তিনি যদি এই অঞ্চল পছন্দ না করতেন তবে বিশ্বভারতী এখানে বিকশিত হতো না। এছাড়াও গুরুদেব ঠাকুর, তাঁর সহকর্মীরা যাঁরা বিশ্বভারতীকে জ্ঞান-সৃষ্টি এবং বিস্তারের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করেছিলেন তাঁরা সকলেই বোলপুরের বাইরে থেকে এসেছিলেন। এক্ষেত্রে উপাচার্য আরও ব্যাখ্যা করেছেন, দুর্ভাগ্যক্রমে বাইরে থেকে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের আনার ধারাবাহিকতা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কারণ যাঁরা প্রাথমিকভাবে বিশ্বভারতীতে এসেছিলেন তাঁদের সন্তানরা কেবল ভূমিপুত্র হওয়ার কারণেই চাকরির দাবিদার হয়ে ওঠেন।
বিশ্বভারতীতে প্রাচীর নির্মাণের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে উপাচার্য লিখেছেন, গুরুদেবের বেঁচে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য চীনা ভবনটি একটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা হয়েছিল। তাছাড়া ৩০বছর আগে পুরাতন মেলার মাঠে বেড়া ও প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তাতে কোনও আওয়াজ বা দাবি সংগঠিত হয়নি। এছাড়া বিশ্বভারতীর আরও কয়েকটি এলাকায় বেড়া দেওয়া হয়েছিল। তারসঙ্গে তিনি আরও লিখেছেন, বর্তমান পৌষমেলা মাঠটি কোনও ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করে না। ১০০বছরের বেশি পুরনো হলে তবেই তাকে ‘ঐতিহ্যে’র মর্যাদা দেওয়া হয়। বিশ্বভারতী আনুমানিক ৬০বছর আগে মাঠটি গ্রহণ করেছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
মাঠের ৫০মিটারের মধ্যে বিশ্বভারতীর ২০টি বিভাগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রাচীর দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তাই কোনও ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিশেষ স্বার্থ ও দুর্বৃত্তদের হুমকি কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এই অধিকার প্রয়োগ থেকে বিরত রাখতে পারে না বলে লিখেছেন তিনি।
এদিনই শান্তিনিকেতনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। তাঁর দাবি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা ও বসন্ত উৎসব করতে অপারগ হলে রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে হোক। কিন্তু রাজনৈতিক নেতা বা দলের হাতে যেন না থাকে। তাহলে জনস্বার্থ যেমন রক্ষা হবে তেমনই ঐতিহ্যও বজায় থাকবে। তিনি এব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বীরভূমের জেলাশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, পৌষমেলার মাঠের সীমানা নির্দেশ নিয়ে পরিবেশ আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুভাষবাবু। তিনি জানান, বিশ্বভারতী নিজের জায়গায় একটি নির্মাণকাজ করছে। তা ভেঙে দেওয়ার অধিকার কারও নেই।
এদিন এসএফআই ও ডিওয়াইএফের উদ্যোগে বোলপুরে নাগরিক কনভেনশন করা হয়। জেলার অন্যান্য প্রান্তেও এই ইস্যুতে প্রতিবাদ হয়। ভাঙচুরের প্রতিবাদে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভ করে এবিভিপি। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Controversy, #SHANTINIKETAN, #Rabindra Nath Tagore, #bidyut chakraborty

আরো দেখুন