করোনা আবহে পরিবহণ বন্ধ করা যাবে না, নির্দেশ কেন্দ্রের
আনলক পর্বের তৃতীয় দফাতেও রাজ্যের মধ্যে এবং এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। হেনস্তার মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, করোনা মোকাবিলার নামে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহণ বন্ধ করা যাবে না।
আনলক পর্ব চালু হতেই রাজ্যের মধ্যে বা ভিন রাজ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নয়া নীতি ঘোষণা করে কেন্দ্র। প্রথম দফার আনলক থেকে রাজ্যের মধ্যে এবং ভিন রাজ্যে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, এর জন্য বিশেষ কোনও পাস আর লাগবে না। তবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য পরিস্থিতি বিচার করে পাস অনুমোদন করতে পারে। তবে আনলক-২-এ সেই পাসের বিষয়টিও উঠে যায়। বর্তমানে আনলক-৩ পর্ব চললেও আন্তঃ ও অন্তঃরাজ্য যাতায়াত ও পরিবহণ বাধাহীন হয়নি। সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দাদের।
সেই কারণেই আনলক-৩ পর্বের নির্দেশিকার ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের উপর জোর দিয়ে সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব ভাল্লা। তিনি লিখেছেন, যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহণে কোনওভাবেই বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, সীমান্ত পেরিয়ে চুক্তিবদ্ধ প্রতিবেশী দেশে যাওয়া এবং পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রেও কোনওরকম বিশেষ ছাড়পত্র অথবা ই-পারমিটের প্রয়োজন হবে না।
এদিকে, শনিবার নতুন করে দেশজুড়ে ৬৯ হাজার ৮৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যা সর্বাধিক। সেইসঙ্গে মোট সংক্রামিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭০১ জন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লক্ষ ছুঁই ছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এ পর্যন্ত মোট ৫৫ হাজার ৭৯৪ জনের প্রাণ কাড়ল মারণ করোনা ভাইরাস। একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৬৩ হাজার ৬৩১ জন। মোট সুস্থ ২২ লক্ষ ২২ হাজার ৫৭৭ জন। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৭৪.৬৯ শতাংশ। এদিকে এদিনই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর বাবা এবং মা, শিবু ও রুপি সোরেন। কয়েকদিন আগেই শিবুর বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মী সহ ১৭ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তার পরই করোনা পরীক্ষা করান শিবু ও তাঁর স্ত্রী। এ দিন তাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
বর্তমানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লক্ষ ৯৭ হাজার ৩৩০ জন। শতাংশের বিচারে ২৩.৪৩। একইসঙ্গে, মৃত্যুর হারও ক্রমশ কমছে। এই মুহূর্তে দেশে মৃত্যুহার ১.৮৭ শতাংশ। সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা পরীক্ষাও। শুক্রবার দেশজুড়ে ১০ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৩৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৩ কোটি ৪৪ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।