অধিকারী পরিবারের কেউ বেইমান নয়: শিশির
রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর জল্পনা নিয়ে বিগত কয়েকদিন যাবতই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, তৃণমূলে অভিষেক-যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রমেই কোনঠাসা করার চেষ্টা হয়েছে শুভেন্দুকে। আর এবার তাই তিনি বিজেপিতে নাম লেখাতে চলেছেন। বস্তুত বিজেপির তরফেও এই ধরনের ‘খবর’ বারবার ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। কিন্তু রবিবার বাংলার একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুভেন্দুর বাবা তথা তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী ছেলের ‘বিজেপি-যাত্রা’র বিষয়টি একেবারেই ভুয়ো খবর বলে উড়িয়ে দিলেন।
শিশির অধিকারী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, ‘শুভেন্দুকে নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে। অধিকারী পরিবার বেইমান নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই আমরা কাজ করছি।’ এখানেই থেমে যাননি বর্ষীয়াণ সাংসদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ওঁর মতো নেত্রী আমি খুব কমই দেখেছি। শুভেন্দুও শক্তিশালী নেতা। শুভেন্দু নাবালক নয়, তাঁকে নিয়ে এত কেন অপপ্রচার হচ্ছে, তা ওঁকে জিগ্গেস করলেই উত্তর পাওয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশ দেন, অধিকারী পরিবার তা মেনে চলে।’ তাঁদের পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বরকত’দার সঙ্গে কংগ্রেস করতাম। পরে তৃণমূলে চলে আসি। কংগ্রেস আর করা যাচ্ছিল না। এখন তৃণমূল ছাড়া নিয়ে কারা গুজব রটাচ্ছে? আমি তো বুঝতেই পারছি না।’
শুধু তাই নয়, বিজেপিকেও কটাক্ষ করে শিশির অধিকারী বলেন, ‘এ জেলায় (পূর্ব মেদিনীপুর) বিজেপি কোথায়? মানুষের সেবা করাই আমাদের প্রধান কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততা নিয়ে কেউ যদি প্রশ্ন তোলেন, তাহলে তাঁর মতো মূর্খ কেউ নেই। মমতা যদি ৩০ বছর আগে দেশে ক্ষমতায় আসছেন, তাহলে এদেশের এই হাল হত না। সরকারি সংস্থাগুলিকে তিনি বিক্রি করে দিতেন না। রেলকে আরও সুন্দরভাবে সাজাতেন।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার ডুমুরজোলা স্টেডিয়ামে তৃণমূল ছাত্র-যুবদের একটি অনুষ্ঠানে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, অভিষেক-শুভেন্দু আগামী প্রজন্মের নেতা। তাঁরা আগামী ৫০ বছরের নেতৃত্ব তৈরি করে যাবেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, সেই থেকে শুভেন্দু বনাম অভিষেক সংঘাত শুরু। প্রকাশ্যে না হলেও অন্দরে অন্দরে তা বেড়েছে। আর সেই সূত্রেই বিধানসভা ভোটের আর এক বছর বাকি না থাকা সময়েই শুভেন্দুর দলবদলের জল্পনা শুরু হয়, কিন্তু রবিবার সেই জল্পনায় জল ঢাললেন শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী।