যানজট কমাতে বাইপাসের উপর হবে ফ্লাইওভার
করোনার প্রভাব পড়েছে রাস্তাতেও। সংক্রমণের আশঙ্কায় গণপরিবহণ এড়িয়ে চলছেন অনেকেই। ব্যবহার বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি বা দু’চাকার। এখনই রাস্তায় তার প্রভাব টের পাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। সেকথা মাথায় রেখেই এবার শহরের বুকে আরও একটি উড়ালপুল গড়ার পরিকল্পনা নিল রাজ্য সরকার। তা হবে কলকাতার লাইফলাইন ই এম বাইপাসের উপর। যানজট কমিয়ে বাইপাসের গতি বাড়ানোই এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। শহরের সবথেকে উঁচু এই উড়ালপুলটির পরিধি হবে ভিআইপি বাজার থেকে কালিকাপুরের কাছে মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি পর্যন্ত, প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ। নাম দেওয়া হতে পারে রুবি ফ্লাইওভার। গোটা প্রকল্পটির খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। রেলের অধীনস্থ সংস্থা রাইটস ইতিমধ্যেই এব্যাপারে ফিজিবিলিটি রিপোর্ট তৈরি করছে। তার খসড়া জমা পড়েছে কেএমডিএ-র কাছে। নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছেন রাইটসের ইঞ্জিনিয়াররা।
অফিস টাইমে ভিআইপি বাজার থেকে অভিষিক্তা মোড় পর্যন্ত যানজটে নিত্যদিন নাকাল হতে হয় যাত্রীদের। তাঁদের সুরাহা দিতে এই উড়ালপুল তৈরির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওই এলাকায় বাইপাসে মধ্যবর্তী অংশ বরাবর বিমানবন্দর থেকে গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ চলছে। ফলে অন্য কোনও কাঠামো গড়া সম্ভব নয়। তাই স্থির করা হয়েছে, বাইপাসের দু’প্রান্ত বরাবর তৈরি হবে এই উড়ালপুল। উভয় প্রান্তেই থাকবে তিনটি করে মোট ছ’টি লেন। বাইপাসে গাড়ি চলাচলে কোনও অসুবিধা হবে না বলেই মত কেএমডিএ-র।
সূত্রের খবর, এই উড়ালপুলটির একটি প্রান্ত নামবে অভিষিক্তা মোড়ে। ডান দিকে বেঁকে যা যুক্ত করবে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডকে। এই অংশটি মেট্রো লাইনের অনেকটা উপর দিয়েই নামবে। এছাড়া রুবি মোড়ে তৈরি করা হবে সার্কুলার এরিয়াল পাস। উড়ালপুলটি সম্পূর্ণ হতে মোট তিন বছর সময় লাগবে। তবে করোনা এবং বেহাল আর্থিক অবস্থার কারণে নির্মাণকাজ শুরুর দিনক্ষণ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। রাইটসের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন পরিকাঠামো গঠন সংক্রান্ত কমিটির কাছে প্রস্তাব পেশ করা হবে বলে কেএমডিএ সূত্রে খবর।
সাম্প্রতিক সময়ে মহানগরের গতি বাড়তে একাধিক উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। নকশায় ত্রুটি থাকার কারণে ইতিমধ্যে বাইপাসের উপর চিংড়িঘাটা উড়ালপুলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমডিএ। তবে আপাতত বছর পাঁচেক সেটিকে মেরামত করে চালানো হবে। তারপরই সেটিকে ভেঙে ওই জায়গায় আরও বড় ফ্লাইওভার গড়ার কথা। সব মিলিয়ে আবারও বদলে যেতে চলেছে কল্লোলিনী কলকাতা।