সুশান্তের সন্তানের মা হতে চেয়েছিলাম, এখন নিজে আত্মহত্যা করতে চাই- রিয়া চক্রবর্তী
“আমাদের মধ্যে বিয়ের কথা না হলেও, আমি চেয়েছিলাম আমার কাছে ছোট্ট একটা সুশান্ত আসুক। ওঁর সন্তানের মা হতে চেয়েছিলাম”, মন্তব্য সুশান্তকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর (Rhea Chakraborty)।
গোটা দেশের চোখে তিনি এখন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’! একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ। সুশান্তের (Sushant Singh Rajput) বাবাও সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, “রিয়াই আমার ছেলেকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে। ও-ই খুনি। অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক রিয়া আর তাঁর সাঙ্গপাঙ্গকে।” মুম্বই পুলিশ, বিহার পুলিশ, ইডি, সিবিআই, নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো… একাধিক চাপে জর্জরিত রিয়া। একের পর এক জেরার মুখে পড়া, ক্রমাগত ধর্ষণ-খুনের হুমকি পেয়েও চুপ ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার জাতীয়স্তরের এক টিভি চ্যানেলে মুখ খুলেছেন। আর সেখানেই রিয়া চক্রবর্তী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, একাধিকবার তাঁর মাথাতেও আত্মহত্যার চিন্তা ভর করেছিল।
নিজের মানসিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে রিয়া চক্রবর্তীর মন্তব্য, “আমিও আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। অন্তত, বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমি আর আমার পরিবার। ক্রমাগত হুমকি, ঘৃণা, এত মানুষের এত কথা, আমার মাথাতেও আত্মহত্যার ভাবনা এসেছিল। কেউ অন্তত গুলি করে মেরে ফেলুক আমাদের, তাতে যদি শান্তি পায় তাঁরা। এমনিতেও আমাদের ভবিষ্যৎ বলে কিছুই রাখেনি তাঁরা।”
তা এতদিন বাদে কেন মুখ খুললেন? এই প্রশ্নের উত্তরে রিয়ার সাফ মন্তব্য, সুশান্ত আমার স্বপ্নে এসে আমায় বলেছে, “সত্যিটা সবাইকে বলতে। আমাদের মধ্যে কীরকম সম্পর্ক ছিল গোটা দুনিয়াকে জানাতে। আসলে সুশান্তের প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই আমি কিছু বলিনি। আমার নিস্তব্ধতাকে আমার দুর্বলতা ভেবে নেওয়াটা ভুল!” সাক্ষাৎকারে কথা বলতে বলতে কাঁদতেও দেখা যায় রিয়াকে। সুশান্ত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে কর্ণটকের কুর্গে গিয়ে চাষাবাদ করতে চেয়েছিলেন। বছরে একটা সিনেমা করে সেখানে সাধারণভাবেই জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন। একথাও জানান রিয়া।
তা সুশান্তকে যদি এতটাই ভালবাসতেন, তাহলে ৮ জুন সম্পর্ক বিচ্ছেদ করে বাড়ি ছেড়ে কেন বেরিয়ে গিয়েছিলেন? “সুশান্ত আমার সম্পর্কে উদাসীন হয়ে গিয়েছিল। বারবার বলছিল বাড়ি যাও। কারণ, আমি নিজেও অসুস্থ ছিলাম, মানসিক সমস্যা হচ্ছিল আমারও। ৮ জুন আমার একটা থেরাপি সেশন ছিল মনোবিদের সঙ্গে। আমি চেয়েছিলাম সুশান্তের বাড়ি থেকেই ওখানে যাব। কিন্তু সুশান্ত আমায় আগেই চলে যেতে বলেছিল। বলল, ওর দিদি আসবে তার আগেই আমাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। তখন আমি বলেছিলাম, তোমার দিদি মীতুদি (মুম্বইয়ের গোরেগাঁও তে থাকেন) আসলে তবেই যাব। কিন্তু ওঁর নাছোড়বান্দার জন্যই আমাকে বেরিয়ে যেতে হয়। সুশান্তের পরিবারের কেউ আমায় পছন্দ করতেন না। আমি বেরনোর পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাকে কোনও ফোন করেনি ও। খারাপ লেগেছিল, যাঁর অসুস্থতার টাইমে আমি পাশে ছিলাম, আজ যখন আমি অসুস্থ সে আমাকে দূরে কেন সরিয়ে দিল? ভেবেছিলাম ওঁর হয়তো আমাকে আর প্রয়োজন নেই। ভেঙেও পড়েছিলাম। ভাট সাহেবের কাছে পরামর্শ চাইতেই উনি বলেন, তুমি তোমার বাবার কথা ভেবে শক্ত থাকো।”