করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শরীরের অন্যান্য অঙ্গও: এইমস
শুধু ফুসফুস নয়, শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি করতে পারে করোনা ভাইরাস। দেশে সংক্রমণের রেকর্ড বৃদ্ধির মধ্যেই অশনি সঙ্কেত শোনালেন এইমসের একদল বিশেষজ্ঞ। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, ফুসফুসের সমস্যার ভিত্তিতে রোগীকে মৃদু, মাঝারি ও মারাত্মক শ্রেণীতে ভাগ না করে অন্যান্য অঙ্গেও এর প্রভাবের ভিত্তিতে করোনাকে দেখা উচিত।
বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৭৫ হাজার ৭৬০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যা সর্বোচ্চ। এর ফলে সংক্রামিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৩ লক্ষ ১০ হাজার ২৩৪ জন। এদিন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কৃষাণপাল গুর্জর। এদিন প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ২৩ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছুঁয়েছে ৬০ হাজার ৪৭২ জন। তবে দেশবাসীকে স্বস্তি দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৬ হাজার ১৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৭৭১ জন। সুস্থতার হার ৭৬.২৪ শতাংশ।
করোনার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে তা আলোচনা করতে নীতি আয়োগের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘ন্যাশনাল ক্লিনিকাল গ্র্যান্ড রাউন্ডস’ বৈঠকে বসেছিল এইমসের বিশেষজ্ঞ দল। এইমস অধিকর্তা ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়ার নেতৃত্বাধীন সাপ্তাহিক এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, নিউরোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক ডাঃ এম ভি পদ্মা শ্রীবাস্তব, কার্ডিওলজির প্রফেসর ডাঃ অম্বুজ রায় এবং মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ নীরজ নিশ্চল। বৈঠকে গুলেরিয়া বলেন, গত আট মাসে যাকে আমরা ভাইরাল নিউমোনিয়া বলে মনে করেছি, ফুসফুসের বাইরে তার অনেক প্রভাব রয়েছে।
ফুসফুসের উপরিভাগে থাকা এসিই-২ রিসেপটরের মাধ্যমে করোনা কোষে প্রবেশ করে। কিন্তু, এই রিসেপটর শুধু ফুসফুসে নয়, অন্যান্য অঙ্গেও রয়েছে। তাই করোনায় সেই অঙ্গগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নীরজ নিশ্চল বলেন, করোনায় স্নায়বিক ক্ষতিও দেখা যাচ্ছে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ারও প্রমাণ মিলেছে। যা সেই রোগীকে স্ট্রোক, এনসেফেলাইটিস বা অন্যান্য জটিল সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অম্বুজ বলেন, অনেক করোনা আক্রান্ত রোগীর ‘পালস রেট’ কমে যাচ্ছে। সাধারণত এই সমস্ত রোগীদের আমরা পেসমেকার বসাতে উপদেশ দিই। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, হার্টের সমস্যা নয়, করোনার ফলে তাঁদের পালস রেট কমে গিয়েছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট রোগীর পালস রেট বাড়াতে নির্দিষ্ট ওষুধ দিতে হচ্ছে।