মমতার মাস্টারস্ট্রোক, ৮০টি সরকারি হাসপাতালে শুরু হচ্ছে নয়া পিজি কোর্স
ক্রমেই চাহিদা বাড়ছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা স্পেশালিস্টের। স্বাস্থ্য দপ্তর হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে বারবার বিজ্ঞাপন দিলেও অভাব মিটছে না। পরিস্থিতি সামলাতে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার নতুন আটটি পিজি পাঠ্যক্রম চালুর ছাড়পত্র দিয়েছে। এগুলি দু’বছরের কোর্স। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে রাজ্যের ৮০টি হাসপাতালে এই পাঠ্যক্রম চালু করতে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
এমবিবিএস পাশ করার পর সেই ব্যাচের কোনও পড়ুয়াকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে পেতে আরও তিন-চার বছর সময় লাগে সরকারের। মোট তিন বছরের পাঠ্যক্রম। ভর্তির প্রস্তুতির জন্য লাগে আরও দু’-এক বছর। এই সময় বাঁচাতেই নতুন আটটি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা পাঠ্যক্রম এনেছে ন্যাশনাল বোর্ড অব এগজামিনেশনস (এনবিই)। সেগুলি হল স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা, শিশু চিকিৎসা, অ্যানাসথেসিওলজি, টিবি ও বক্ষরোগ চিকিৎসা, রেডিওডায়াগনোসিস, ফ্যামিলি মেডিসিন, চক্ষু চিকিৎসা এবং ইএনটি। ৮০টি সরকারি হাসপাতালে এই পাঠ্যক্রম চালু করছে রাজ্য। কীভাবে পাঠ্যক্রমগুলি চালু করা যায়, কী কী রয়েছে তাতে ইত্যাদি জানিয়ে শতাধিক বেডের সরকারি হাসপাতালের সুপারদের চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে স্বাস্থ্যভবন। প্রথম দফায় কতগুলি আসন দিয়ে চালু করা হবে এই কোর্স, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। উদ্দেশ্য একটাই, দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাব মেটানো।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, শয্যাসংখ্যার দিক থেকে মেডিক্যাল কলেজগুলির পর আসে জেলা হাসপাতালগুলি। বর্তমানে ১৩টি হাসপাতাল ও পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজে (রূপান্তরিত) ন্যূনতম ৫০০ শয্যা আছে। ১০০ থেকে ৪৯৯টি শয্যা রয়েছে ৩৬টি মহকুমা হাসপাতালে। আবার ২৪টি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ১০০ বা ততোধিক শয্যা রয়েছে। প্রতিটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা রয়েছে ৩০০ থেকে ৫০০’র মধ্যে। অর্থাৎ একশোর বেশি বেড রয়েছে এমন সরকারি হাসপাতালের সংখ্যা গোটা রাজ্যে প্রায় শ’খানেক। পড়ানোর লোকবল থাকলে এবং সরকার চাইলে এই সবগুলিতেই ন্যূনতম পাঁচটি করে নয়া পিজি আসন চালু করা যায়। তাহলে দু’বছর পর থেকেই প্রতি বছর আরও ৫০০ জন করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মিলবে। এছাড়াও ১০০ বা ততোধিক শয্যার প্রচুর বেসরকারি হাসপাতালও চালু করবে এই পাঠ্যক্রম। ফলে এই সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে অদূর ভবিষ্যতে জনসংখ্যার অনুপাতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাব হওয়ার কথা নয়।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা প্রথম দফায় ৮০টি হাসপাতালে পাঠ্যক্রমগুলি চালু করতে চাইছি। নিঃসন্দেহে এতে আগের তুলনায় অনেক দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আমরা পাব। আমরা চাইছি, বড় গ্রামীণ হাসপাতালেও এই পাঠ্যক্রম চালু করতে। কিন্তু চাইলেই সব হয় না। পড়ানোরও লোক চাই। পরিষেবা ও পঠন-পাঠনের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই যা করার করব।