সোমেনের পর কে? বিধান ভবনে চড়ছে পারদ
সোমেন মিত্রের মৃত্যুর পর এখন একরাশ অনিশ্চয়তা ফের গিলে ফেলেছে প্রদেশ কংগ্রেসকে। দীর্ঘসূত্রিতার ফর্মুলা দূর থাক, আপাতত শর্টটার্ম সিদ্ধান্ত নিতেও ল্যাজেগোবরে অবস্থা প্রদেশ কংগ্রেসের। সোমেন মিত্রের আকস্মিক মৃত্যুর পর কে ধরবে প্রদেশ কংগ্রেসের হাল? আপাতত তা-ই ভাবাচ্ছে হাইকমান্ডকে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নতুন কাউকে দেওয়ার জন্য এআইসিসি-র কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন লোকসভায় দলের নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁর নিজের পছন্দ বহরমপুরের বিধায়ক এবং বিধানসভায় কংগ্রেসের সচতেক মনোজ চক্রবর্তী। কিন্তু এই নামে আবার আপত্তি রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের বাকি নেতাদের। প্রদেশ কংগ্রেসের তিন কার্যকরী সভাপতি আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী, নেপাল মাহাতো এবং শঙ্কর মালাকারও নিজেদের বিধান ভবনে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্রিয় হয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ সোমেনবাবুর মৃত্যুর পরেই কলকাতায় এসে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখন সম্ভাব্য নতুন সভাপতি হিসেবে অধীর, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং আব্দুল মান্নানের নাম গিয়েছিল তাঁর কাছে।
লোকসভায় দলনেতা এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান— দিল্লিতে এই জোড়া দায়িত্বের জন্য অধীরবাবু যদি বিধান ভবনের ভার আর না নিতে পারেন, তা হলে প্রদীপবাবু এবং মান্নানের মধ্যে কাউকে বেছে নেওয়া হোক। কিন্তু কংগ্রেসের ভাঙা বাজারেও যে সব জেলার ‘লবি’ এখনও জোরালো, তাদের মধ্যে মুর্শিদাবাদ চাইছে মনোজবাবুকে প্রদেশ সভাপতির আসনে বসাতে।
সোমেনবাবু যেমন রাজ্যসভায় সনিয়া গাঁধীর প্রার্থী দেবপ্রসাদ রায়কে হারিয়ে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছিলেন, বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে অধীরবাবুও তেমনই ২০০৬ সালে কংগ্রেসের ‘সরকারি’ প্রার্থীকে হারিয়ে নির্দল মনোজবাবুকে বিধায়ক করিয়েছিলেন। মনোজবাবু প্রদেশ সভাপতি হলে অধীরবাবুরে হাতেই যে রিমোট থাকবে, কংগ্রেসে তা কারও অজানা নয়! আবার মালদহ জেলার লবি বলতে শুরু করেছে, বরকত গনি খানের ভাই ডালুবাবুই বা দায়িত্ব পাবেন না কেন?
সব মিলিয়ে, কংগ্রেস আছে কংগ্রেসেই। প্রদেশ নেতৃত্ব তাকিয়ে হাই কমান্ডের দিকে।