শিশুদের জন্য শিগগিরই খেলনা হাব, ‘মন কি বাত’-এ বললেন মোদী
একদিকে করোনাভাইরাসে কাবু সারা ভারতবর্ষ। আর একদিকে কিছু দিন আগেই ঘোষিত হয়েছে নয়া শিক্ষানীতি। এর মাঝেই আবার NEET-JEE পরীক্ষা নিয়েও বিস্তর বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এমনই এক সন্ধিক্ষণে ৬৮তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষানীতির বিষয়ে আরও জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘খেলনা আর খেলার মধ্যে দিয়েই শিশুদের পড়াশোনার ব্যাপের আরও আগ্রহী করে তুলতে হবে।’ এই কারণেই যে জাতীয় শিক্ষানীতিতে খেলার উপরে বিশেষ করে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে, সে কথাও স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। খেলার মধ্যে দিয়েই শেখা আর খেলনা তৈরির বিষয়টিও পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানালেন নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বললেন, ‘দেশকেই শিশুদের জন্য আরও বিপুল পরিমাণে খেলনা তৈরি করতে এগিয়ে আসতে হবে।’ বর্তমান বিশ্বে এই মুহূর্তে খেলনা শিল্পের পিছনে মোট লগ্নি ৭ লক্ষ কোটি টাকা, যে সংখ্যাটা অন্যান্য ছোট-মাঝারি শিল্পের তুলনা নিতান্তই কম। আর সেই জায়গায় ভারতের লগ্নির পরিমাণ তো আরও কম।
করোনাভাইরাস এবং দেশের বেশ কিছু জায়গায় লকডাউনের কারণেই শিশুরা এখন গৃহবন্দি। ৩০ সেপ্টম্বর অবধি বন্ধ দেশের প্রায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই। এমনই এক সংকটজনক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে যে, শিশুমনই বারবার ভাবিয়েছে যে কথাও বললেন তিনি। পাশাপাশিই বিশ্বকবিকে উদ্ধৃত করে তাঁর বক্তব্য, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, সেরা খেলনা আসলে অসম্পূর্ণ। আর বাচ্চারা খেলতে-খেলতে নিজেরাই তা সম্পূর্ণ করবে। কবিগুরু আমাদের বলে গিয়েছেন সেই কবেই, খেলনা এমন হবে, যা বাচ্চাদের সৃজনশীলতার উপর জোর দেবে।’
দেশে খুব শিগগিরই খেলনা হাব তৈরি হবে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জোরকদমে আলোচনাও শুরু করে দিয়েছেন বলেও জানালেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘খেলনা তৈরির শিল্পেও ভারতবর্ষকে আত্মনির্ভর হতে হবে।’ বললেন, ‘খেলনা যে শুধু বিনোদনের শর্তপূরণ করে এমনটা নয়। শিশুমনে সৃজনশীলতার প্রসার ঘটাতেও অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে খেলনার।’
কম্পিউটার গেমসের জনপ্রিয়তার বিষয়টিও তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ‘বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই আজকাল কম্পিউটার গেমে মগ্ন। কিন্তু ভারতকে এক্ষেত্রেও আত্মনির্ভর হতে হবে।’ সাম্প্রতিক ভারতীয় অ্যাপ ‘কু’ এবং ‘চিঙ্গারি’-র জনপ্রিয়তার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বললেন, ‘আত্মনির্ভর ভারতের অন্যতম সেরা উদাহরণ এই দুই অ্যাপ।’
এ দিকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে চতুর্থ দফার আনলক পর্ব শুরু হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘করোনাযুদ্ধে আমরা তখনই জয়ী হব, যখন দেশবাসী সুস্থ থাকবে, সকলে দু’গজ দূরত্ব মেনে চলবেন।’ কথা প্রসঙ্গে দেশের মানুষের জন্য পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা যে কতটা, সে কথাও বললেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ‘সেপ্টেম্বরেই দেশে পুষ্টি মাস পালিত হবে। দেশবাসীকে অবশ্যই অংশগ্রহণ করতে হবে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা থেকে শিশুদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি খুবই জরুরি।’