প্রণবের প্রধানমন্ত্রী না হতে পারার দুঃখ মোচন হয়েছিল ‘ভারত রত্ন’ প্রাপ্তিতে
ভারতের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় সম্মান হলো ভারতরত্ন। দেশের রাষ্ট্রপতি এই সম্মান তুলে দেন প্রাপকের হাতে। কিন্তু কাকে কাকে এই সম্মান দেওয়া হবে তা স্থির হয় এক প্রলম্বিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে একটি বিচারকমন্ডলী গঠিত হয়। তারপর সেই নামগুলি ক্যাবিনেটে মঞ্জুর হয়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় অতীতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে ভারতরত্ন সম্মান দেন। আর সম্প্রতি প্রণববাবুকেই এই সম্মান দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
১৯৪৭ সাল থেকে যতজন বাঙালি ভারতরত্ন পেয়েছেন, তাঁদের সংখ্যাও কম। সত্যজিৎ রায় ও রবিশঙ্করের পর তিনিই তৃতীয় ব্যক্তি। বাংলার রাজনেতা হিসেবে তিনিই প্রথম। বাঙালি হিসেবে এজন্য আমরা নিশ্চয়ই গর্বিত। এর আগে কলকাতার সঙ্গে যুক্ত টি কৃষ্ণমাচারি এবং সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এ সম্মান পান। কলকাতার মানুষ মাদার টেরিজার নাম প্রস্তাব করেন প্রণববাবু স্বয়ং।
কোনও সন্দেহ নেই, প্রণববাবু বাংলার যোগ্য সন্তান। তাঁর সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো, তিনি কিন্তু সংঘাতের পথে না গিয়ে সকলকে নিয়ে, অর্থাৎ নানা মতের মানুষকে নিয়েই চলতে আগ্রহী। ৪০ বছর এই সংসদে তিনি দাপটের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। জীবনে যদি কোনও দুঃখ থেকে থাকে, সম্ভবত সেটা একটাই – প্রধানমন্ত্রী হতে না পারা। সোনিয়া প্রণবকে নয়, মনমোহনকেই বেছে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য। রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন অবশ্য সে দুঃখ মোচন করেছিল অনেকটাই।
তবে সবশেষে ভারতরত্নের সম্মানলাভের পর প্রণববাবুর জীবনে আর কোনও অভিমান থাকল না কারোর প্রতিই।
লেখক: জয়ন্ত ঘোষাল