শৈলেন মান্না – সহস্রাব্দের সেরা ফুটবলার
কলকাতা ময়দানের মান্নাদা বলে চিরপরিচিত শৈলেন মান্নার জন্ম ১৯২৪ সালের ১লা সেপ্টেম্বর। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ক্লাব ফুটবলে প্রবেশ করেন তিনি। দু’বছর হাওড়া ইউনিয়নে খেলার পর যোগ দেন মোহনবাগানে। এরপর একটানা ১৯ বছর মোহনবাগান ক্লাবে খেলার নজির রয়েছে শৈলেন মান্নার।
তার পায়ের শটে এতোটাই জোর ছিল যে, বিপক্ষের গোলরক্ষক রীতিমতো শঙ্কিত থাকতেন। শোনা যায়, একবার তার শটের বল ধরতে গিয়ে বিপক্ষের গোলরক্ষকের হাত ভেঙে গিয়েছিল।
১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ সালে তার অধিনায়কত্বে এশিয়ান গেমসে ভারতীয় ফুটবল দলের সোনা জয়।
১৯৫০ সালে ফুটবল বিশ্বকাপে সুযোগ পায় ভারতীয় ফুটবল দল। সে সময় বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন শৈলেন মান্না। কিন্তু মুম্বাই থেকেই ফিরিয়ে আনা হয় ফুটবল দলকে। বিশ্বকাপে না যেতে পারার সেই আক্ষেপটার কথা জীবনভর ভুলতে পারেননি মান্নাদা। কথা প্রসঙ্গে তিনি চিরকালই সেই ঘটনার উল্লেখ করতেন।
১৯৫২ সালের অলিম্পিক বা ১৯৫৪ সালের এশিয়ান গেমসের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতায় ভারতকে নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৩ সালে ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ইয়ারবুকে বিশ্বের সেরা ১০ ফুটবল অধিনায়কের মধ্যে জায়গা করে নেন মান্নাদা।
১৯৫২ থেকে ৫৬ সাল, টানা ৪ বার কুয়ানড্রাগুলার টুর্নামেন্ট তার নেতৃত্বে জিতেছিল ভারতীয় ফুটবল দল। ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী সম্মানসহ ২০০১ সালে মোহনবাগান রত্নে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। খেলা ছাড়ার পরও মাঠের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়নি এই প্রবাদপ্রতীম খেলোয়াড়ের। দীর্ঘদিন মোহনবাগান ক্লাবের প্রশাসনের দায়িত্বেও ছিলেন। ২০০০ সালে তাকে সহস্রাব্দের সেরা ফুটবলারের সম্মান দেয় অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন।
২০১২ সালের ২৭ শে ফেব্রুয়ারী তিনি কলকাতায় পরলোক গমন করেন।