মেমো ফাঁসে ফেসবুক-বিজেপি আঁতাত স্পষ্ট হল আরও
জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের সঙ্গে গোপন আঁতাঁত রয়েছে বিজেপির। ব্যবসায়িক স্বার্থেই শাসক দলের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার পথে হাঁটছে মার্ক জ়ুকারবার্গের সংস্থা। মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সংস্থার বিভিন্ন মেমোতে বিজেপির প্রতি নরম মনোভাব নিয়েছিলেন সংস্থার পাবলিক পলিসি প্রধান আঁখি দাস। দেশের বিরোধী দলগুলিকে করেছিলেন তাচ্ছিল্য। প্রকাশিত রিপোর্টে উঠে এসেছে ফেসবুকের ভারতীয় কর্তার পারিবারিক সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠতার প্রসঙ্গ। বলা হয়েছিল, সেই খাতিরে ২০১৪ সালে ভোটের প্রচারেও ফেসবুকের থেকে সুবিধা পেয়েছিল বিজেপি।
“অবশেষে ভারত রাষ্ট্রীয় সমাজতন্ত্র থেকে মুক্তি পেল। সফল হল তিরিশ বছরের অধ্যাবসায়।” এই ভাষাতেই ২০১৪ লোকসভা ফলাফল সম্পর্কে পোস্ট করেছিলেন আঁখি। কংগ্রেস দলের পরাজয়ের বিষয়ে একটি পৃথক পোস্টে লিখেছিলেন, “শক্তিশালী” মোদী ভারতের এই পুরোনো দলকে পর্যুদস্ত করেছেন। ফেসবুকের শীর্ষস্থানীয় বিশ্বব্যাপী নির্বাচনের কর্মকর্তা কেটি হরবাথকে এই কাজের “দীর্ঘতম সহযাত্রী” বলেও অভিহিত করেন তিনি।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের দাবি, ফেসবুকের কিছু কর্মচারী আঁখি দাসের বর্ণিত অনুভূতি এবং কার্যকলাপ ভালো চোখে দেখেননি। তাদের মতে, এইগুলি সংস্থার দীর্ঘকালীন নিরপেক্ষতার সাথে খাপ খায় না। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত করা এই পোস্টগুলি পোস্ট করা হয়েছে সংস্থার ভারতে কর্মীদের জন্য তৈরি করা ফেসবুক গ্রুপে। এই বছরগুলিতে কয়েক’শজন ফেসবুক কর্মী এই গ্রুপের সদস্য ছিলেন।
ইতিমধ্যেই আঁখি দাসের বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। জলঘোলা হয়েছে ফেসবুকের নিরপেক্ষতা নিয়ে। মানুষের মনে ঘৃণা ও বিদ্বেষের জন্ম দেওয়া বিজেপি নেতাদের অনেক বক্তব্যই নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে চট করে মুছে দিচ্ছে না তারা। একই কথা ফের বলেছে নতুন রিপোর্টও। তবে তার সঙ্গে তৈরি হয়েছে ব্যবসায়িক স্বার্থের বিপজ্জনক ককটেল।
ফলে আরও বেশি করে প্রশ্ন উঠছে, এতগুলি স্বার্থ একসঙ্গে জড়িত থাকলে, কী ভাবে আর শাসক দলের ঘৃণা ছড়ানো বার্তা মুছে ফেলবে ফেসবুক? মিথ্যে প্রচারই বা হোয়াটসঅ্যাপ মারফত হাতবদল হওয়া আটকাবে কী ভাবে? সামনেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে কতটা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে ফেসবুক? বাংলার রায় বিজেপির পক্ষে করতে কি নিয়ম ভেঙে প্রচারে নামবেন আঁখি? প্রশ্ন উঠছেই।