করোনা পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে প্রশংসা স্বাস্থ্যকর্তাদের
করোনা পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথমদিনে জলপাইগুড়ি জেলায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন তিন স্বাস্থ্যকর্তা। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ দেবাশিস ভট্টাচার্য ও ন্যাশনাল হেল্থ মিশনের ডিরেক্টর ডাঃ সৌমিত্র মোহন। এদিন তাঁরা প্রথমে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। পরে তাঁরা বিশ্ববাংলা কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এরপর জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ওই প্রতিনিধি দলটি বৈঠক করে।
করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই উদ্বেগ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ সফরে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। করোনার পাশাপাশি জেলার সার্বিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর হাল নিয়েও প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করেন। এদিন জলপাইগুড়ি জেলার সার্বিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিনিধি দলটি।
সার্কিট হাউসে বৈঠকের পর রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, করোনার পাশাপাশি জেলার সার্বিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো খতিয়ে দেখলাম। এই অতিমারী পরিস্থিতিতেও জলপাইগুড়ি জেলার সার্বিক অবস্থা উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলির তুলনায় যথেষ্ট সন্তোষজনক। মৃত্যুর হার অনেকটাই কম। বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গণে যে পরিকাঠামো গড়া হয়েছে সেটাও যথেষ্ট ভালো। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটেও পর্যাপ্ত বেড এখানে রয়েছে। বর্তমানে সেখানে পাঁচজন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এর পাশাপাশি বেশকিছু বিষয়ে জোর দেওয়ারও কথা বলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তিনি বলেন, বর্তমানে জেলায় করোনা পরীক্ষার হার অনেকটাই বেড়েছে। সেটা আরও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। অনেকেই র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করাচ্ছেন না। এই টেস্ট যাতে বাড়ানো হয় সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন আছে। এছাড়াও যাঁদের মধ্যে কো-মর্বিডিটি রয়েছেন তাঁদের পৃথকভাবে চিহ্নিত করে চিকিৎসা করার ব্যাপারে জোর দেন তিনি। সেই সঙ্গে জলপাইগুড়িতে ভিআরডিএ করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ সম্পূর্ণভাবে তৈরি আছে। জলপাইগুড়িতে বর্তমানে রোগীর চাপ তুলনামূলকভাবে কম। প্রয়োজন পড়লে এখানে বেড আরও বাড়ানো হতে পারে।
উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ওএসডি ডাঃ সুশান্তকুমার রায় বলেন, স্বাস্থ্য কর্তারা জলপাইগুড়ি জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে সার্বিক সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রথম থেকেই জেলায় আশাকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে চিকিৎসক ও নার্সরা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশা রাখছি, সার্বিক চিকিৎসা পরিকাঠামোয় আরও ভালো করতে পারব।
এদিকে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলায় এখনও পর্যন্ত মোট ৭৮৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর মধ্যে ৭১৯ জনের করোনামুক্তি ঘটেছে। জেলায় সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৬৫ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। অন্যদিকে, এদিন জলপাইগুড়ি শহরে এক পুলিস আধিকারিক করোনা সংক্রামিত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর মিলেছে।