জিএসটি নিয়ে মোদীকে কড়া চিঠি ক্ষুব্ধ মমতার
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জিএসটি সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন।
মঙ্গলবার ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “জিএসটি জটিলতা নিয়ে আমি ভীষণ ভাবে উদ্বিগ্ন। রাজ্যগুলির প্রতি ভারত সরকারের আস্থা ও নৈতিক দায়িত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ভিত্তি লঙ্ঘন করা হচ্ছে”।
দীর্ঘ চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “এ ধরনের পদক্ষেপে মৌলিক ভিত্তির প্রতি অবহেলা করা হচ্ছে। জিএসটি ব্যবস্থার সূচনায় ভ্যাট চালু থাকাকালীন রাজ্যগুলি নিজের কর আদায়ের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিল”।
তাঁর কথায়, “এই সমস্ত ক্ষমতা ত্যাগ করার একমাত্র শর্ত ছিল জিএসটি সংগ্রহের প্রথম পাঁচ বছরের ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলির উদ্দেশে কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি”।
(প্রধানমন্ত্রীকে লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি)
প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি লিখেছেন, “শুধুমাত্র গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নন, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আপনিও জিএসটি চালুর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু প্রয়াত অরুণ জেটলি ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে দ্ব্যর্থহীন ভাবে এবং প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, সে সময় বিজেপির জিএসটি বিরোধিতার মূল কারণ ছিল, তখনকার কেন্দ্র সরকারের প্রতি অবিশ্বাস। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ ছিল বিজেপির। তাঁর সেই মন্তব্যই এখন বিজেপিকে নিশানা করছে। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যগুলিকে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকে সম্মান করা উচিত।”।
চিঠিতে মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, “রাজ্যগুলিকে সহযোগিতা করার পরিবর্তে, কেন্দ্রের তরফে কি এই রাজ্যগুলিতে সহায়তা বন্ধ করা এবং তাদের উপর আরও আর্থিক বোঝা চাপানো উপযুক্ত কাজ?”
প্রসঙ্গত, ২৭ আগস্ট জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে অর্থমন্ত্রী জানিয়ে দেন, জিএসটি কম্পেনশেসন সেস থেকে আদায়ীকৃত একটি অংশ রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। ‘ঈশ্বরের সৃষ্টি’ করোনা মহামারির অভাবনীয় কারণে ২০২১ অর্থবর্ষে জিএসটি (GST) ঘাটতি ২.৩৫ লক্ষ টাকায় ঠেকবে। এই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে দু’টি বিকল্প পথের হদিশ দেয় জিএসটি কাউন্সিল। সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্যগুলিকে সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
মমতার কথায়, “আমরা কোথা থেকে টাকা পাব। আমরা কর আদায়ের টাকা কেন্দ্রকে দিয়ে দিচ্ছি। তা থেকে আমাদের আর কিছু ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। মে-জুন মাসে জিএসটি রাজ্যের প্রাপ্য ছিল ৪১০০ কোটি টাকা। আমরা এখনও তা পাইনি। আমরা কী ভাবে সরকার চালাব”।