ভ্রমণ বিভাগে ফিরে যান

নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঘুরে আসুন রাজাভাতখাওয়া 

September 2, 2020 | 2 min read

জয়ন্তীর পাশেই রাজাভাতখাওয়া, মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে। বক্সা টাইগার রিজার্ভের প্রবেশপথও বলা যায়। প্রতিবছর ভ্রমণপ্রেমিকদের ভিড় জমে এখানে। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বন, অর্কিড, বন্যপ্রাণী, পাখি ভরা এই রাজভাতখাওয়ার ঐতিহাসিক গুরুত্বও কিছু কম নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক যুদ্ধজয়ের কাহিনীও।

কোনো স্থানের নামকরণ হয় ঐতিহাসিক ঘটনা, আঞ্চলিক পরিবেশ, বৈচিত্র্য, লোকজন, কর্মজীবনের ওপর নির্ভর করে। রাজাভাতখাওয়া নামকরণের সঙ্গে যুক্ত আছে এমনই এক ইতিহাস। রাজাভাতখাওয়া ছিল কোচবিহার রাজ্যপাটের অংশ। ১৭৬৫ সালে কোচবিহারের সিংহাসনে বসেন ধৈর্যেন্দ্রনারায়ণ। তিনি ছিলেন তেরোতম রাজা। ভুটানের রাজা দেবরাজ ছিলেন তাঁর প্রতিপক্ষ। তিনি ঘোষণা করেন, বক্সার অঞ্চল ভুটানের অন্তর্গত। অঞ্চলের অধিকারের জন্য ভুটানের রাজা দেবরাজ তাঁর সেনাপতি পানসু তমা-কে পাঠান। 

কোচবিহারের রাজা প্রতিরোধ করলে সেনাপতি তাঁকে বন্দি করে প্রথমে বক্সার তারপর ভুটানের রাজধানী পুনাখা-তে নিয়ে যান। এমত অবস্থায় কোচবিহারের রাজপরিবার রাজাকে উদ্ধার ও রাজ্যরক্ষার জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির দ্বারস্থ হয়। 

প্রথমে ব্রিটিশরা এই বিষয়ে গুরত্ব না দিলেও পরবর্তীকালে রাজি হয়। কারণ রেলপথ তৈরি করার জন্য প্রয়োজন কাঠের। আর আলিপুরদুয়ার ও ডুয়ার্সের জঙ্গল কাঠের জন্য উপযুক্ত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজি হল। ১৭৭৪ সালে ব্রিটিশ সেনাকর্তৃক কোচবিহারের রাজাকে উদ্ধার করা হয়। রাজাকে স্বাগত জানাতে রাজপরিবারের তরফ থেকে এই অঞ্চলে এক মহা ভোজসমারোহের আয়োজন করা হয়। দীর্ঘ বন্দিদশার পর ফিরছেন রাজা। তাই এই ভোজসমারোহে আয়োজন করা হয় বাঙালি ট্রেডিশনাল খাবার ভাতের সঙ্গে নানা উপকরণ। 

এখানে রাজা ভাত খেয়েছিলেন বলে এই অঞ্চলের নামকরণ হয় রাজাভাতখাওয়া। এই কথাকে স্মরণীয় করার জন্য বনদপ্তর তৈরি করা মিউজিয়ামটির গায়ে রাজামশাইয়ের সপার্ষদ সেই ফিরে আসার দৃশ্য আঁকা রয়েছে বড় বড় করে।

নৈসর্গিক দৃশ্য ছাড়া এখানে দেখার মতো হল বনদপ্তরের তৈরি মিউজিয়াম ও অর্কিড হাউস। এখানে বন থেক সংগৃহীত নানাধরণের প্রাণীর ফসিল রাখা রয়েছে। বন্যপ্রাণীর প্রতিকৃতিও রাখা আছে। অর্কিড হাউসে দেখা মেলে নাম না জানা হাজারো অর্কিডের। কিন্তু এই সবকিছুই ছবি তোলা বা স্পর্শ করা নিষিদ্ধ।

কি ভাবে যাবেন 

কলকাতা থেকে ট্রেনে নিউ আলিপুরদুয়ার বা আলিপুরদুয়ার জংশন। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে অথবা অটোতে রাজাভাতখাওয়া। রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্ট হয়ে বক্সা জঙ্গলে ঢোকার পারমিশন বা অনুমতিপত্র সংগ্রহ করে, টিকিট কেটে সাফারির জন্য নির্দিষ্ট গাড়িতে সাফারি করতে পারেন। গাড়িপিছু একটি সাফারির খরচ ২৩০০-২৪০০ টাকার মতো। ছ’জনের জন্য নির্দিষ্ট। গাইড-সহ।

কখন যাবেন

অক্টোবর থেকে মার্চ সব থেকে ভাল সময়। বর্ষায় নয়। শীতের সময় ভাল শীতকাপড় রাখবেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Travelling, #Rajabhatkhawa

আরো দেখুন