দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বিশ্বভারতীতে পাঁচিল তোলা যাবে না, ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যের বলছে আইন

September 4, 2020 | 2 min read

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কোনদিনই পাঁচিল তুলে ঘিরে ফেলা হবে না এবং রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নকে সাকার করে তুলতে চিরকাল মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই অবস্থান করবে বলে বহু আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে দেশের সংবিধান সংসদ এবং সুপ্রিম কোর্ট। গত কিছুদিন ধরেই শান্তিনিকেতনে মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলার জন্য বিশ্বভারতীর বৈজেপিক উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মরিয়া প্রচেষ্টা এবং তার নিজেকে বিশ্বভারতীর সর্বময় কর্তা হিসেবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে দেশজুড়ে কম জল ঘোলা হয়নি।

তার প্রেক্ষিতেই বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাংশু চক্রবর্তী বলেন, পাঁচিল দিয়ে পৌষ মেলার মাঠ ঘেরার আইনগত কোনও ক্ষমতাই নেই উপাচার্য বা বিশ্বভারতীর। পাঁচিল তোলার এই সিদ্ধান্ত ১৯৫১ সালের শুধু বিশ্বভারতী আইনের পরিপন্থীই নয়, সুপ্রিম কোর্টের আদেশের অবমাননা এবং সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ ও ৫১-এ (জি)-ধারারও পরিপন্থী। তিনি ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এখনো পর্যন্ত বিশ্বভারতীর রক্ষণাবেক্ষণ এবং তার দায়িত্ব নিয়ে স্পষ্ট ভাষায় আইনের ব্যাখ্যায় জানান, অনেকেরই একটা ভুল ধারণা আছে যে, ৩০০০ হেক্টর জমির মালিক বুঝি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তারা রাজ্য সরকারকে উপেক্ষা করেই যখন যেমন ইচ্ছে নির্মাণকার্য চালাতে পারে। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বলছে, বিশ্বভারতীর অধীনস্থ জমির মধ্যে কোনও বেআইনি নির্মাণকাজ বন্ধ করার
অধিকার রাজ্য সরকারের। তার মধ্যে পাঁচিল অন্যতম।

এমনকি বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং সেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আধুনিক ভারতের রূপকার হিসেবে কার্যত পুজো করেন সেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কিন্তু রবীন্দ্রনাথের আদর্শ মেনে বিশ্বভারতীতে কোন পাচিল না তোলার সুপারিশ করেছিলেন। ১৯৫১ সালে সংসদের বিতর্কে অংশ নিয়ে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দীর্ঘ বক্তৃতার সারমর্ম হল, বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করা চলবে না। কেন্দ্রীয় সরকারকে রবীন্দ্রনাথের আদর্শ অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করতে হবে।

বিশ্বভারতী রক্ষণাবেক্ষণের রাজ্যের ভূমিকা প্রসঙ্গে অরুণাংশু বাবু জানান, কেন্দ্রের ‘বিশ্বভারতী আইন, ১৯৫১’ তৈরিই হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি (কনসেন্ট) নিয়ে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলেছে, “বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৫১ যেহেতু রাজ্য সরকারের অনুমতিতে হয়েছে, সেহেতু রাজ্য সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এটা দেখা যে, রবীন্দ্রনাথের আদর্শের সঙ্গে বেমানান। পরিবেশ তৈরির চেষ্টা যেন না হয়।

ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন, মুক্ত আকাশ এবং মুক্ত ভূমিতেই এই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে। কোনও বালি, পাথর সংযোজিত হবে না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bidyut chakraborty, #Shyamaprasad Mukherjee, #Mamata Banerjee, #bjp, #viswabharati university

আরো দেখুন