বাড়ছে সুস্থতার হার, রাজ্যে কমল নতুন করোনা আক্রান্তও
টেস্ট বেশি হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। আবার দৈনিক নতুন আক্রান্তের চেয়ে সুস্থতার হার বেশি। সুস্থতার হার বাড়ছে। সংক্রমণের হার কমতির দিকে। এই পুরো বিষয়টিই রাজ্যের করোনা চিত্রে সদর্থক ইঙ্গিত— এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যদিও এটাই যে করোনা আক্রান্তের চূড়ান্ত রূপরেখা, এমনটা এখনই বলে দেওয়ার মতো সময় হয়নি বলেই মত এই বিশেষজ্ঞদের।
শুক্রবার রাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৭৮ জন। গত কাল বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৮৪। অর্থাৎ আজ নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা গত কালের চেয়ে ৬ জন কম। এই নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৭১ হাজার ৬৮১। এর মধ্যে কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২২ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় ২৪ ঘণ্টায় ৫৭২, কোচবিহারে ১৬৬, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৫৭, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫৫, হুগলিতে ১৪৩, আলিপুরদুয়ার ১৩৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৩৩, পশ্চিম বর্ধমান ১৩০ এবং হাওড়ায় ১২০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে এখনও উদ্বেগ রয়েছে প্রতিদিনের মৃত্যু নিয়ে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের। এই নিয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩ হাজার ৪৫২। গতকাল বৃহস্পতিবারের হিসেবে ২৪ ঘণ্টায় মৃ্ত্যু হয়েছিল ৫৫ জনের। বুধবার মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৫। সবচেয়ে বেশি কোভিড আক্রান্ত রোগীর মৃ্ত্যু হয়েছে কলকাতায় (১৭)। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনায় ১৪ জন, হাওড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫ জন করে কোভিড পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
তবে আক্রান্ত ও মৃতের এই সংখ্যা হলেও রাজ্য প্রশাসন কিছুটা স্বস্তি মিলছে সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানে। প্রতিদিন নতুন আক্রান্তের চেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা বেশি হলে স্বাভাবিক ভাবেই এক সময় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে পৌঁছে যাবে। টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নতুন আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা কোভিড রোগীর সংখ্যা বেশি থাকছে। বৃহস্পতিবার সুস্থতার হার ছিল ৮৪.০২ শতাংশ। শুক্রবার তা আরও বেড়ে হয়েছে ৮৪.৪৮ শতাংশ।
শুক্রবারের বুলেটিনে রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ৩০৫ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ৬৫৪। আবার সুস্থতার হারেও আশার আলো দেখছে রাজ্য প্রশাসন।
শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে করোনা আক্রান্তের হারও কমছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মোট কোভিড টেস্ট হয়েছে ৪৫ হাজার ৬২০টি। এখনও পর্যন্ত এটাই এক দিনে সর্বোচ্চ টেস্ট। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজার ২৯১। অর্থাৎ ৩২৯টি বেশি টেস্ট হয়েছে। অথচ নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ৬ জন কম। সর্বাধিক টেস্ট হয়েও পজিটিভ রিপোর্টের সংখ্যা কম হওয়া করোনার গ্রাফচিত্রে অত্যন্ত ভাল বলেই মত বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের।
প্রতিদিন কত সংখ্যক রোগীর টেস্ট হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভি রেট বা সংক্রমণের হার। এই হার যত কমবে, করোনার গ্রাফে ততটাই স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতিবারের তুলনায় এ দিনের সংক্রমণের হারও কমেছে। শুক্রবার সংক্রমণের হার ৬.৫৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ৬.৫৯ শতাংশ।