‘একটা মধ্যবিত্ত পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য অভিনন্দন দেশ’, বিবৃতি রিয়ার বাবার
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু তদন্তে নেমে মাদক যোগ পায় সিবিআই। সেই যোগ সূত্র অনুসারেই আলাদা করে তদন্ত শুরু করে ইডি এবং নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রিয়া চক্রবর্তী, তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তী এবং সুশান্তের বাড়ির ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। শুক্রবার সাত সকালে রিয়া ও শৌভিকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় নার্কোটিকস কনট্রোল ব্যুরোর আধিকারিকরা। অবশেষে গ্রেফতার করা হয় শৌভিক চক্রবর্তী এবং স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। শনিবার তাঁদের আদালতে তোলা হয়। শনিবার দিনভর জেরা করা হয় সুশান্তের বাড়ির রাঁধুনি দীপেশ সাওয়ান্তকে। দীর্ঘ জেরার পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে NCB। রবিবার বেলা ১১ টায় তাঁকে আদালতে তোলা হবে। এদিন সকাল থেকেই মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার কথা রয়েছে রিয়া চক্রবর্তী এবং শৌভিককে। শৌভিক, স্যামুয়ে, দীপেশ ছাড়াও আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে মাদক যোগে, কিন্তু তাঁর নাম এখনও জানা যায়নি।
সুশান্তের বাবা রিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এফআইআর করার পর বেশ কয়েকবার তদন্তকারীরা ডেকে পাঠিয়েছে রিয়ার বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীকেও। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর ফোন। তবে ছেলে শৌভিককে গ্রেফতারের পর প্রথম মুখ খুললেন রিয়ার বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী। একটি বিবৃতি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘অভিনন্দন দেশ। আমার ২৪ বছরের ছেলে গ্রেফতার হল। আমি নিশ্চিত এরপর নিশ্চয় আমার মেয়েকে গ্রেফতার করা হবে। জানিনা আমার মেয়ের পর পরিবারের কাকে গ্রেফতার করা হবে। নিশ্চয় কেউ থাকবে। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারকে কীভাবে ধ্বংস করে দিতে হয় আপনি চোখে আঙুল দিয়ে শিখিয়ে দিয়েছেন। তবে অবশ্যই, ন্যায় বিচারের জন্য সবই খতিয়ে দেখা আবশ্যক। জয় হিন্দ, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী ( অবসরপ্রাপ্ত)’।
শৌভিক ও স্যামুয়েলের বিরুদ্ধে এনসিবি বেশ কয়েকটি মামলা রুজু করেছে। যদিও শৌভিকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এখনও কোনও ড্রাগের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আব্বাস লাখনি ও করণ অরোরা বলে যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে ৫৯ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গিয়েছে। এবং সুশান্ত ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে। জেরায় শৌভিক জানিয়েছেন, যাঁদের থেকে তিনি মাদক কিনতেন সেখানেই তাঁরা মাদকের অনেক নাম দিয়েছিলেন।
সুশান্তের মৃত্যুর একমাস পর পটনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কে কে সিং। তিনি আর্থিক তছরুপ এবং তাঁর ছেলেকে অতিরিক্ত ড্রাগ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে এই অভিযোগ করেছিলেন। ওরপর তদন্ত শুরু করে ইডি। তদন্তভার যায় সিবিআই এর হাতে। কিন্তু সিবিআই জানিয়েছিল, রিয়াকে গ্রেফতার করার মতো এখনও কোনও তথ্যপ্রমাণ আসেনি তাঁদের হাতে। কিছুদিন আগেই রিয়া জানিয়েছিলেন সিবিআই, এনসিবি এবং ইডির জেরার তাঁরা বিধ্বস্ত। সেই সঙ্গে মিডিয়া ট্রায়াল তো আছেই। একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে তিনি লেখেন, কীভাবে তাঁর বাবাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁর মা অসুস্থ। বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও ভরতি করতে হয়েছে তাঁকে। মুম্বই পুলিশের কাছে সুরক্ষা চেয়েছিলেন রিয়া। তাঁরা সামান্য মধ্যবিত্ত পরিবার, কীভাবে তাঁদের শেষ করে দেওয়া হচ্ছে তাই বলেছিলেন রিয়া। এবার একই কথা বললেন রিয়ার বাবাও।