বেলপাহাড়ীতে ডিজি বীরেন্দ্র, মাওবাদী অভিযোগ নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে
মাওবাদী অভিযোগের ঘটনায় শনিবার বেলপাহাড়ীর ধাঙ্গিকুসুম গ্রাম পরিদর্শন করলেন রাজ্য পুলিসের ডিজি বীরেন্দ্র। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া গ্রামে গিয়ে হুদহুদি ঝর্না সহ তিনি পুরো এলাকা হেঁটে পরিদর্শন করেন। তবে, যে চারজন পর্যটক মাওবাদীদের মুখে পড়েছিল বলে দাবি করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং গল্প বলে দাবি করেছে জেলা পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ঝাড়গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে। ঝাড়গ্রামের পুলিস সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠোর বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের চারটি ছেলে ওখানে বেড়াতে গিয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছেলের মোবাইল হারিয়ে গিয়েছিল। মোবাইল হারানোর জন্য বাড়িতে বকা খাওয়ার ভয়ে ছেলেটি গল্প ফেঁদেছিল। মাওবাদী সংক্রান্ত কোনও ঘটনা নেই। ছেলেটি জেরায় ভুল স্বীকারও করেছে।
এদিন ধাঙ্গিকুসুম গ্রামে যান ডিজি। সঙ্গে এসটিএফের আইজি অজয়কুমার নন্দ সহ পুলিসের শীর্ষ আধিকারিকরা ছিলেন। ডিজির পরিদর্শনের সময় সাতটি গাড়িতে পযর্টকরাও বেড়াতে এসেছিলেন। পরে ডিজি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে এই এলাকা দেখতে এসেছি। জেলায় রিভিউ মিটিংও করেছি। ঝাড়গ্রাম জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও করেন ডিজি। বৈঠকে এডিজি(পশ্চিমাঞ্চল) সঞ্জয় সিং, আইজি(বাঁকুড়া রেঞ্জ) আর রাজশেখরণ, পুলিস সুপার উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক আয়েষা রানিও বৈঠকে যোগ দেন। টানা দু’ঘণ্টা বৈঠক চলে। জানা গিয়েছে, গত ২০ দিনে মাওবাদীদের নামে যে চারটি ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কিছুদিন আগে পচাপানির ঘটনা নিয়ে পুলিস সুপার বলেন, কিছু লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। যারা এসব করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, এদিন সকালেই কাশ্মীর থেকে তিন কোম্পানি সিআরপিএফ ঝাড়গ্রামে এসে পোঁছেছে। তার মধ্যে ১৮৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি এবং ২৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ‘ই’ কোম্পানি মহিলা সিআরপিএফ রয়েছে। জানা গিয়েছে, ১৮৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের ক্যাম্পে যাবে। ২৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের মহিলা কোম্পানি ঝাড়গ্রামে থাকবে। সিআরপিএফের এক আধিকারিক বলেন, ওই মহিলা কোম্পানি লালগড়ের শিলাপাড়া ক্যাম্পে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবে। তারপর প্রয়োজন মতো ডিউটি দেওয়া হবে। পুরুলিয়া জেলায় ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী সমস্ত থানা এলাকাকে সতর্ক করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পগুলিকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। শুক্রবার রাতেই এই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ওইদিন রাত থেকেই ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার সীমান্ত সলগ্ন বান্দোয়ান থানা এলাকায় নতুন করে এরিয়া ডমিনেশন চলে। বিভিন্ন পয়েন্টে চেকিংও বাড়ানো হয়েছে। এদিন বিকেলে পুরুলিয়ায় ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছেছে। নাগাবাহিনী চলে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথাই ছিল। এদিন তারা এসে পৌঁছয়। সম্প্রতি বাঘমুন্ডি থানা এলাকায় জঙ্গল থেকে সন্দেহজনক তিনজনকে আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে কিছু না মেলায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, পূর্ব সিংভূম এলাকায় মাওবাদীদের একটি স্কোয়াড ঘোরাফেরা করছে বলে পুলিসের কাছে খবর রয়েছে। তাই শুরু হয়েছে কড়া নজরদারি। শনিবার বেলপাহাড়ীর ধাঙ্গিকুসুমে রাজ্য পুলিসের ডিজি বীরেন্দ্র।