আলুর সরকারি দাম মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা
পাইকারি থেকে খুচরো বাজার, রাজ্যে কোথাও আলুর দাম কমছে না। শনিবারও হিমঘর থেকে বের হওয়ার পর জ্যোতি আলুর দাম ছিল ২৫-২৬ টাকা কেজি। কলকাতার খুচরো বাজারে তা ৩২ টাকা থেকে কোথাও কোথাও ৩৪-৩৫ টাকাতেও বিক্রি হয়েছে। রাজ্য সরকার গত সপ্তাহে নবান্নের বৈঠকে হিমঘর থেকে বের হওয়ার পর আলুর দাম ২২ টাকায় নামিয়ে আনতে বলে ব্যবসায়ী সংগঠন ও হিমঘর মালিকদের প্রতিনিধিদের। কী দামে কেনা আলু এবার হিমঘরে ঢুকেছে, সেখানে রাখতে কত খরচ পড়ছে, তার বিস্তারিত হিসেব দেখে সরকার জানায়, ২২ টাকায় আলু বের করলেও ভালো লাভ থাকছে। কারণ এবার ১১-১৩ টাকায় কেনা আলু হিমঘরে ঢুকেছিল।
হিমঘরের ভাড়া ও অন্যান্য খাতে সব মিলিয়ে খরচ পড়ছে পাঁচ টাকার মতো। কিন্তু সরকারের এই লাভের হিসেব মানতে রাজি নন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা এখনও বলছেন, আলুর দাম কী হবে, সেটা বাজারের চাহিদা-জোগানের ভিত্তিতে ঠিক হবে। ফলে চড়া দামে আলু কিনে যেতে হচ্ছে আম জনতাকে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ব্যবসায়ী সংগঠন কলকাতার খুচরো বাজারে কিছু স্টল খুলে সেখানে কিছুটা কম দামে আলু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। আলিপুরদুয়ারে এটা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে স্টল খুললেও সেখানে ২৭-২৮ টাকার কমে আলু এখন পাওয়া যাবে না। ব্যবসায়ী মহলের বক্তব্য, শহরের এক শ্রেণীর খুচরো বিক্রেতা অনেক বেশি দাম নিচেছন।
এদিকে, গতবারের থেকে অনেকটাই কম পরিমাণ আলু এবার হিমঘরে রাখা হয়েছিল। যদিও হিমঘর থেকে আলু বের করার হার এবার কিছুটা বেশি। কারণ বাজারে চাহিদা বেশি। তা সত্ত্বেও রাজ্যের হিমঘরগুলিতে এখনও প্রায় ২৯ লক্ষ টন আলু রয়েছে, যা আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের চাহিদা মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট। এই অবস্থায় ভিন রাজ্যে কী পরিমাণ আলু আগামী দিনে যাবে, তার উপর দাম অনেকটা নির্ভর করবে বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী কয়েকটি রাজ্য যেমন, বিহার, অসম, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় আলুর ফলন কম। তাই পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওই রাজ্যগুলিতে আলু সরবরাহ করা হয়। ভিন রাজ্যে পাঠালে লাভ বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এতে উৎসাহী। সরকারের পক্ষেও সরাসরি ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু নিয়ম মেনে পাঠানো হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে কড়াকড়ি করতে পারে প্রশাসন। সেই কাজ কিছুটা শুরুও হয়েছে।