কোভিড মোকাবিলায় কেন্দ্রের বঞ্চনা বাংলাকে
আবার প্রকট হল বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণ। কোভিড মোকাবিলায় মমতা বন্দোপাধ্যায় পরিচালিত রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় ২,৭০০ কোটি টাকা। অথচ এই খাতে কেন্দ্র থেকে এসেছে মাত্র ২০০ কোটি টাকা। এমনটাই দাবি নবান্নের।
এবিষয়ে নবান্নের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, “কোভিড -১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রাথমিকভাবে আমাদের কাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় করতে হয়েছিল। এখন, আমরা কোভিড নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত কাজগুলিতে প্রতি মাসে ১২৫ কোটি থেকে ১৩০ কোটি টাকা ব্যয় করছি। সমস্যাটি হ’ল আমরা কেন্দ্রের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য পাচ্ছি না।”
সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার কোভিড পরীক্ষার জন্য প্রচুর ব্যয় করছে। কারণ প্রতিটি কিট রাজ্যকে প্রায় ৩০০ টাকায় কিনতে হয়। নিয়োগ করতে হয়েছে প্রযুক্তিবিদ, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, জন সচেতনতা প্রচার এবং পরিবহণ খাতেও রাজ্যকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
নবান্নের আরেক আধিকারিক জানান, আইসিএমআর কিট সরবরাহ করলেও, রাজ্যকে এর জন্য টাকা দিতে হয়। গোটা রাজ্য জুড়ে কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা খরচ হয়। প্রতিদিন প্রায় ৫০,০০০ পরীক্ষা রাজ্যের পক্ষ থেকে করা হয়।
এছাড়াও, কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলি অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এই ক্ষেত্রেও প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান অনুযায়ী, রাজ্য সরকার এই খাতে প্রতিমাসে প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করছে। পাশাপাশি, কোভিড রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান, রাজ্য জুড়ে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রদান, সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং নতুন হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসার পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
গত মার্চ মাসে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর থেকে রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব সংগ্রহ হ্রাস পাওয়ায় কেন্দ্রের সাহায্যের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান এই আধিকারিক। তিনি আরও জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে রাজ্য সরকারকে বিপুল ব্যয় করতে হয়। রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন বন্টন করতেও অনেক টাকা গুনতে হচ্ছে সরকারকে।
এমতাবস্থায় কেন্দ্র থেকে সাহায্য না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। এ বিষয়ে এক আধিকারিকের বক্তব্য, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে কেন্দ্র থেকে বাংলাকে দেওয়া হয়েছে ২০০ কোটি টাকা, সেখানে মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, জিএসটির ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকাও এখনও বকেয়া কেন্দ্রের তরফে।