বন্যেরা বনে সুন্দর, সিনেমা সিনেমা হলে – নতুন ক্যাম্পেন এসভিএফের
করোনার থাবায় থমকে আছে বিশ্বব্যাপী জনজীবন। থেমে আছে শিল্প, চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। চাকরি হারিয়েছেন অনেক অস্থায়ী কর্মী এবং দিনমজুর। এই পরিস্থিতিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে, এটা অনেকে বুঝে গেছে। আগের জীবন কখনো ফিরে পাওয়া যাবে কিনা, কেউ জানে না। বাদ নেই বিনোদন জগত। মুখ আছড়ে পড়েছে এই শিল্প। শিল্পী, কলাকুশলীদের অবস্থা খারাপ। সিনেমা শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরোচ্ছে।
বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কিছু সিনেমা ও সিরিজ মুক্তি পাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু, এতে তো সিনেমা শিল্পের কোনও লাভ হচ্ছে না। দিনদিন ভেঙে পড়ছে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা। এছাড়া মাল্টিপ্লেক্স আসা থেকেই ধুঁকছিল বাংলার সিনেমা হলগুলি। কলকাতায় যেখানে একসময় রমরম করে চলত প্রচুর সিনেমা হল, একে একে তা হাতে গোনা সংখ্যায় এসে দাঁড়িয়েছে। করোনার মধ্যেই বন্ধ হয়েছে কলকাতার দুটো হল প্যারাডাইস ও রক্সি। বন্ধ হওয়ার মুখে বসুশ্রী।
এই অবস্থায় সিনেমা হল্গুলির পাশে দাঁড়ালো শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। তারা নতুন ক্যাম্পেন নিয়ে এলো “বন্যেরা বনে সুন্দর, সিনেমা সিনেমা হলে”। একটি ভিডিওর মাধ্যমে এই অভিনব উদ্যোগের কথা জানান তারা। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের প্রোডাকশন হাউসের আগামী চারটে সিনেমা তারা হইচই অ্যাপে রিলিজ না করে সিনেমা হলে করবে। সেগুলি হল, প্রেম Tame, ড্রাকুলা স্যার, কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন ও গোলন্দাজ।
তাদের যুক্তি মোবাইল বা, কম্পিউটার যতই সহজ উপায় হোক না কেন, সিনেমা দেখার আসল মজা সিনেমা হলেই। তাই তো, ভিডিওতে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কণ্ঠে বার্তা দেওয়া হয়েছে, সবাই বলে, সময় কখনো থেমে থাকে না। আমরা বলি সময় ধরা পড়ে সিনেমায়। সুখ দুঃখ হাঁসি কান্না নাচ গান যুদ্ধ কার্নিভ্যাল রহস্য-রোমাঞ্চের কোল্যাজ তৈরী হয়। আসলে আমরা সিনেমা দেখি না, সিনেমা আমাদের জীবনকে পর্দায় দেখায়। বন্যেরা বনে সুন্দর, সিনেমা সিনেমা হলে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব সিনেমা হল বাঁচানোর আবেদন জানান কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাঁর সুরে সুর মেলান টলিউডের অন্যান্য তারকারাও। শুধু টলিউডই নয়, বলিউডের তারকারাও চলচ্চিত্র বাঁচানোর এই উদ্যোগের অংশীদার হয়েছেন। অংশীদার হয়েছেন দক্ষিণী তারকারাও। সিনেমা হল খোলা প্রসঙ্গে টুইট করেছে মাল্টিপ্লেক্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়াও। ’
এর মাঝে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত সিনেমা হলের পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ঘূর্ণিঝড়ে রাজ্যের যে সব সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলের সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে, তাদের জন্য দু’লক্ষ টাকা এবং যাদের আংশিক ক্ষতি হয়েছে, তাদের জন্য এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।
সব মিলিয়ে, সিনেমা হলকে বাঁচানোর জন্য সংগঠিত হচ্ছেন শিল্পী, প্রযোজক, কলাকুশলীরা।