ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার, পূর্বাভাস ফিচের
কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমেছে ২৩.৯ শতাংশ। এবার ফিচ রেটিং জানাল, ২০২০-২১ সালের আর্থিক বছরে সামগ্রিকভাবে ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হবে ১০.৫ শতাংশ। করোনা অতিমহামারী ঠেকাতে গত মার্চে দেশ জুড়ে লকডাউন করা হয়। তাতেই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্থনীতি।
ফিচ বলেছে, ২০২০ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে, অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জিডিপি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু অর্থনীতি বিকাশের হার স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে যথেষ্ট।
কয়েক বছর আগেও বড় দেশগুলির মধ্যে ভারতের মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) বাড়ছিল সবচেয়ে দ্রুত হারে। করোনা অতিমহামারীর জেরে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। ভারতে যেভাবে কোভিড সংক্রমণের হার বাড়ছে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই দেশ বিশ্বে করোনার হটস্পট হয়ে উঠতে পারে। ফলে চলতি আর্থিক বছরে এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারতের জিডিপিই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি হারে কমতে চলেছে।
ভারতে এখন রোজ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি। তার মধ্যে ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, অতিমহামারীর কবল থেকে বেরিয়ে আসা সহজ হবে না এদেশের পক্ষে। তাতে সময় লাগবে অনেক বেশি। সরকার ইতিমধ্যে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু তাতে খুব বেশি কাজ হয়নি। লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বহু ব্যবসা দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়েছে।
অতিমহামারী শুরুর আগেই ভারতের অর্থনীতি সংকটে পড়েছিল। ‘এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি’ হিসাবে পরিচিত ভারতের অর্থনীতির বিকাশের গতি হয়ে আসছিল ধীর। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণত কমছিল। সেই সঙ্গে কমছিল ভোগ্যপণ্যের চাহিদা। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে প্রায় সব ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। লক্ষ লক্ষ শ্রমিক শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এর ফলে চার দশকে প্রথমবার বার্ষিক জিডিপি কমে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে, অর্থনীতির যে ক্ষেত্রগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার মধ্যে আছে পরিবহণ, হোটেল, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ। বাৎসরিক রিপোর্টে আরবিআই স্পষ্ট বলেছে, ভোগ্যপণ্যের চাহিদা ব্যাপক কমেছে। তা কোভিড পূর্ববর্তী স্তরে আসতে সময় লাগবে অন্তত কয়েক বছর।
বার্কলে পিএলসি সংস্থার চিফ ইকনমিস্ট রাহুল বাজোরিয়া বলেন, “লকডাউন যেভাবে অর্থনীতিকে ধাক্কা দিয়েছে তা অভুতপূর্ব। পুরো এপ্রিল ও মে মাস জুড়ে লকডাউন চালু ছিল। জুন মাসেও রাজ্যগুলি ছোট ছোট জায়গা জুড়ে লকডাউন চালিয়ে গিয়েছে। এর ফলে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা আংশিক পূরণ করতে পারে গ্রামীণ অর্থনীতি।”