সেরে ওঠার পর ফের আক্রান্ত গুজরাতে, উদ্বেগ
বেঙ্গালুরুর পর এবার গুজরাত। করোনার পুনঃসংক্রমণ বা ‘রিইনফেকশন’ দেখা গেল চারজন ব্যক্তির শরীরে। এবং তা প্রথম সংক্রমণের চার মাস পরে। আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন ডাক্তার এবং একজন ৬০ বছরের গৃহবধূ। চারজনেরই প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল এপ্রিল মাসে। দ্বিতীয়বার ১৮ আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফের তাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এর ফলে ভ্যাকসিন আসার আগে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির সক্রিয়তা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
গুজরাতের স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন পুরুষই পেশায় চিকিৎসক। তাঁদের বয়স ৩৩ বছর। তৃতীয় মহিলাও চিকিৎসক (২৬)। চতুর্থ ব্যক্তি ৬০ বছরের প্রৌঢ়া। এপ্রিল ১৩ থেকে ২১ তারিখের মধ্যে তাঁদের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তবে চিকিৎসার পরে চারজনেরই সেরে উঠেছিলেন। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ফের তাঁদের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওই চার ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসের স্ট্রেন সক্রিয় রয়েছে। অথচ তেমন কোনও উপসর্গ নেই। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন, চারজনেরই রক্তে অ্যান্টিবডির ছিটেফোঁটাও নেই।
শুধু তাই নয়, প্রথমবার সংক্রামিত হওয়ার পরে রক্তে যে ইমিউনোগ্লোবিউলিন অ্যান্টিবডিতৈরি হয়েছিল সেটা গত চারমাসের মধ্যেই বিলীন হয়ে গিয়েছে। ফলে করোনা ভাইরাস আটকানোর মতো তাঁদের শরীরে কোনও প্রতিরোধই নেই। তাই দ্বিতীয়বার শরীরে হানা দিয়েছে সার্স-কোভ-২। এর আগে বেঙ্গালুরুতে ২৭ বছরের এক তরুণী দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রসঙ্গত, করোনার পুনঃসংক্রমণ প্রথম দেখা গিয়েছিল চীনে। পরে হংকংয়ে এক ব্যক্তির শরীরে পুনঃসংক্রমণ ধরা পড়ে। বিজ্ঞানীদের মতে, পুনঃসংক্রমণ তখনই হবে যখন পরপর ভিন্ন ভাইরাল স্ট্রেন শরীরে ঢুকবে।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সারা দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৮০৯ জন। অর্থাৎ, গত কয়েকদিন আক্রান্তের সংখ্যা ৯০-এর ঘরে থাকার পর এদিন কিছুটা কমেছে সংক্রমণ। যার জেরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২ লক্ষ ৮০ হাজার ৪২২ জন। দেশের প্রথম জেলা হিসেবে পুনেতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ১৩৩ জন। যা করোনা কালে সর্বোচ্চ। মোট প্রাণ হারিয়েছেন ৭২ হাজার ৭৭৫ জন।
এর পাশাপাশি একদিনে সুস্থ হয়েছেন ৭৩ হাজার ৫২১ জন। এ পর্যন্ত করোনাজয়ীর সংখ্যা ৩৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৫০ জন। সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭.৬৫ শতাংশ। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লক্ষ ৮৩ হাজার ৬৯৭ জন। সোমবার করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬২১টি। ফলে, মোট নমুনা পরীক্ষা পাঁচ কোটি ছাড়িয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে করোনা মোকাবিলার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক না পরার অভিযোগ আসছে।