উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

ফালাকাটা উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছতে নাজেহাল বিজেপি

September 10, 2020 | 2 min read

ফালাকাটা উপনির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিজেপিকে। কারণ, এই কেন্দ্রে জেতার থেকে ব্যর্থতার আতঙ্ক বেশি কাজ করছে গেরুয়া শিবিরে। তবে দলীয়ভাবে এখনও কাউকে ‘প্রোজেক্ট’ করা না হলেও বিজেপির অন্দরে প্রার্থী হিসেবে অনেকের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এমনকী চায়ের টেবিলেও প্রার্থীর নাম নিয়ে চর্চা চলছে। তবে যে নামগুলি নিয়ে জল্পনা হচ্ছে, তাঁরা প্রকাশ্যে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করছেন না। এক্ষেত্রে দলই চূড়ান্ত সিদ্বান্ত নেবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু বিজেপি চোখ বন্ধ করে কাউকে প্রার্থী হিসেবে বেঁছে নিতে পারছে না। দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী ঠিক করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। যাকেই প্রার্থী করা হোক, সংঘবদ্বভাবে জেতার লক্ষ্যেই কাজ চলছে।’

দিন ঘোষণা না হলেও আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যেই ফালাকাটার আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। সময় কম থাকায় এই উপনির্বাচনকে পাখির চোখ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। দুই দলের কাছেই এই নির্বাচন হল ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে উপনির্বাচনেও ভোট লিড পেতে সবরকমভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। এই বিধান সভা কেন্দ্রের ১৩টি অঞ্চলে বিজেপির ১৩ জন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক কাজ করছেন। ২৬৬টি বুথের দায়িত্ব পালন করছেন বুথ পালকরা। দলের আদি-নব্য দ্বন্দ্বও মেটাতেও ময়দানে নেমেছেন দলের জেলা সভাপতি। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গত লোকসভা নির্বাচনের মত ফালাকাটা উপনির্বাচনেও জেতার ক্ষেত্রে রামের মূল ভরসা হল বাম। কিন্তু ফালাকাটায় এবার বামফ্রন্টের প্রার্থী থাকবে। এক্ষেত্রে বাম ভোটের একাংশ ঘুরে আসার সম্ভাবনা থাকায় বিজেপির দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। তাই বাম ভোটকে ধরে রাখতে সিপিএম থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদেরকেও সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছে পদ্মশিবির।

এজন্য বিজেপি ফালাকাটায় প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক মেপে পা ফেলতে চাইছে। তবে করোনা পরিস্থিতির আগে তৃণমূলের পিকে’র টিমের মোকাবিলায় ফালাকাটায় ঘাঁটি গেড়েছিল আরএসএস নিয়ন্ত্রিত এবিভিপি-র টিম। সূত্রের খবর, ওই টিমের প্রতিনিধিরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সমীক্ষা চালিয়েছে। এখন প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রে ওই টিমের রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে বিজেপি। তবে দলের ভিতরে প্রার্থী হিসেবে দেওগাঁও হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক বর্মন-এর নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তিনি এক সময় সক্রিয়ভাবে আরএসএস করলেও এখন দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। কিন্তু দীপক বাবু বলেন, ‘আমাদের দলের প্রার্থী হল পদ্মফুল। এব্যাপারে দল সিদ্বান্ত নেবে।’ নিজের নামের জল্পনা প্রসঙ্গে তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।

এদিকে বাম ভোটের কথা মাথায় রেখে সিপিএম থেকে বিজেপিতে আসা প্রাক্তন মন্ত্রী যোগেশ চন্দ্রবর্মনের এক সময়ের ছায়াসঙ্গী প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক গুয়াবরনগরের রঞ্জিৎ বর্মনের নাম নিয়েও জল্পনা হচ্ছে। তবে রঞ্জিৎ বাবু বলেন, ‘দল কাকে প্রার্থী করবে জানি না। যাকেই প্রার্থী করা হোক, দলকে জেতানোর লক্ষ্যেই কাজ করছি।’ আবার আদি নেতাদের থেকেও প্রার্থী করার দাবি উঠেছে। এক্ষেত্রে ২০১১ সালের প্রার্থী শালকুমারহাটের হেমন্ত কুমাররায় ও ২০১৬ সালের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্রমন্ডলের নামে চর্চা হচ্ছে। দলের আদি নেতা হিসেবে যথেষ্ট পরিচিত মুখ হেমন্ত বাবু অবশ্য বলেন, ‘দল প্রার্থী করলে আমার কোনও আপত্তি নেই।’ নারায়ণ বাবু বলেন, ‘এটা দলের সিদ্বান্ত।’ এছাড়া জুনিয়ার হাই স্কুলের শিক্ষক পাঁচ মাইলের রঞ্জন বর্মনের নাম নিয়েও দলের অন্দরে জল্পনা চলছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু জেলা কমিটি এখনও কাউকে চুড়ান্ত হিসেবে বেছে নিতে পারেনি। তাই বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘যাঁদের ইচ্ছে রয়েছে তাঁরা আবেদন করতেই পারেন। আমরা সেই আবেদন দলের উপরমহলে পাঠিয়ে দেব৷ সিদ্বান্ত নেবে রাজ্য ও কেন্দ্র কমিটি।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Falakata

আরো দেখুন