‘হিন্দু হিন্দু’ চিৎকার করলে বাংলায় জেতা যাবে না – চন্দ্র বসু
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় ক্ষমতা দখলের খোয়াব দেখছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু আদতে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই প্রকাশ্যে আসছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ, নেতা-কর্মীদের চাপা অসন্তোষ। এবার যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি গুরুগম্ভীর চিঠি দিলেন বঙ্গ বিজেপি নেতা তথা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের প্রপৌত্র চন্দ্র কুমার বসু। মঙ্গলবার এই চিঠিতে তিনি একুশ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বিজেপির বেশকিছু সমস্যা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে লিখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এই চিঠি দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়াকে কাজে লাগালে হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ স্লোগান প্রকৃতভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং ভেদাভেদের রাজনীতি দূরে সরিয়ে তৃণমূল স্তরে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে বিজেপিকে।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক মাস ধরে দলের বিরুদ্ধে কিছু তেতো অথচ সত্যি মন্তব্য করে বঙ্গ বিজেপির চক্ষুশূল হয়েছেন চন্দ্র কুমার বসু। এর ‘শাস্তি’ হিসেবে তাঁকে আর বঙ্গ বিজেপি সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়নি। গতকাল যে রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশ হয়েছে সেখানেও তাঁকে জায়গা দেয়নি দল। যদিও ওই কমিটির তালিকা প্রকাশ হওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী সহ শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্বকে এই চিঠি দিয়েছেন তিনি। চন্দ্র বসু মনে করছেন, ক্ষমতায় আসার জন্য গেরুয়া শিবিরের অন্দরে ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলতে হবে।
নেতাজির প্রসঙ্গ টেনে তাঁর নাতি বলেছেন, ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে সাম্প্রদায়িক পরিচিতি কখনই গুরুত্ব পায়নি। নেতাজির মত আমিও এই আদর্শে বিশ্বাসী। সেভাবে গেরুয়া শিবিরকেও এই রাজ্যের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে যদি তারা ক্ষমতায় আসতে চায়।’ যে রণনীতি ব্যবহার করে দেশের অন্যান্য জায়গায় সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে তা বাংলায় কাজ করবে না, এটাও স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন চন্দ্র কুমার বসু।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলার রাজনীতি দেশের অন্যান্য অংশের চেয়ে আলাদা। হিন্দুরা আক্রান্ত হলে আমরা অবশ্যই তাদের পাশে দাঁড়াবো। কিন্তু শুধুমাত্র হিন্দু হিন্দু করে চিৎকার করলে হবে না। আমাদের অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তত তিন থেকে চার শতাংশ ভোট অর্জন করার চেষ্টা আমাদের করতেই হবে।’