ডেঙ্গু প্রতিরোধে কঠোর রাজ্য
ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবার শাস্তি ও জরিমানার পথ নিচ্ছে পুরদপ্তর। ডেঙ্গু মশা জন্মাতে পারে এমন জায়গা পরিষ্কার না করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুরসভা এলাকার মধ্যে থাকা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আবাসনগুলিকে এ বিষয়ে নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরদপ্তর। তাতে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে গত ১০ সেপ্টেম্বর রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থা (সুডা) এ নিয়ে পুরসভাগুলিকে নির্দেশিকা দিয়েছে। একইসঙ্গে রাজ্যের নির্বাচিত ৬৪টি পুরসভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ ‘পালস মোড’ কর্মসূচি নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। আগামী দু’মাস ওই কর্মসূচি চলবে। নির্দেশিকায় সুডা কর্তারা বলেছেন, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। এই অবস্থায় ডেঙ্গু যাতে ভয়াল আকার ধারণ করতে না পারে, তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এবছর বর্ষার আসার আগেই রাজ্য সরকার ডেঙ্গু দমনে নেমেছে। ইতিমধ্যে রাজ্যজুড়ে ‘ভেক্টর কন্ট্রোল টিম’ তৈরি করা হয়েছে। তারা পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। একইসঙ্গে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ অ্যাপ। তার মাধ্যমে কাজের নজরদারি চালাচ্ছে পুরদপ্তর। কিন্তু এর মধ্যেই কিছু জায়গায় সমস্যা নজরে এসেছে। গত ২ সেপ্টেম্বর পুরমন্ত্রী ভেক্টর কন্ট্রোল পরিকল্পনা নিয়ে রাজ্যের পুরসভার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচিতে আরও জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সেই মোতাবেক পুরআইন প্রয়োগ করে শাস্তি ও জরিমানার এই সিদ্ধান্ত। সুডা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরআইনে মশার বাড়বাড়ন্ত হতে পারে এমন পরিস্থিতি তৈরি করলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। এমনকী মশক দমনে কাজ না করাটাও শাস্তিযোগ্য। আর এই আইনের উল্লেখ করেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ও আবাসনগুলিকে নোটিস পাঠানো হবে। প্রায় দু’মাস ধরে ডেঙ্গু দমন কর্মসূচি চালানোর পর পুরকর্তাদের পর্যবেক্ষণ, বেশ কিছু সরকারি অফিস পরিচ্ছন্নতার অভাবে ডেঙ্গু মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের তত্ত্বাবধানে সেইসমস্ত চত্বর সাফাই করা প্রয়োজন। সেই কাজে যাতে কোনও বাধা যাতে না আসে, তার জন্যই এই নোটিস। ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকাও পুরসভাগুলিকে জমা করতে বলা হয়েছে। শাস্তি ও জরিমানার সঙ্গেই ভেক্টর কন্ট্রোল কর্মসূচির ‘পালস মোড’ নামে একটি পদক্ষেপ করার নির্দেশও পুরমন্ত্রী দিয়েছেন। ওই পরিকল্পনায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু মশা জন্মাতে পারে এমন পরিবেশগত সমস্যা দূর করা হবে। জেলাশাসকদের নজরদারিতে কাজ করতে হবে। এজন্য অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের ছাড়পত্রও মিলেছে।