রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ পার হলেও রাজ্যে বাড়ছে সুস্থতার হার

September 14, 2020 | 2 min read

রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ছাড়িয়ে গেল দু’লক্ষ। রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২১৫ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ২ হাজার ৭০৮। তবে সংক্রমণের প্রবণতায় বড়সড় কোনও পরিবর্তন নেই। সুস্থতার হার সামান্য বেড়েছে। তবে সংক্রমণের হার কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুশ্চিন্তাও বেড়েছে রাজ্য প্রশাসনের। উদ্বেগ রয়েছে রাজ্যে করোনায় মৃত্যু নিয়েও।

রাজ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল এ বছরের ১৮ মার্চ। তার পর থেকে ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ। প্রথম দিকে ধীরগতিতে বাড়ছিল সংক্রমণ। ১ থেকে ৫০ হাজারে পৌঁছেছিল ২৩ জুলাই, প্রায় চার মাস পর। সেখান থেকে মাত্র ১৯ দিনেই আরও ৫০ হাজার আক্রান্ত হয়ে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষে পৌঁছয় ১১ অগস্ট। ১ থেকে দেড় লক্ষে পৌঁছতে সময় লাগে ১৬ দিন (২৭ অগস্ট)। মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ পৌঁছল আরও ১৭ দিন পর। তবে মাথায় রাখতে হবে, প্রতিদিন টেস্টিংয়ের সংখ্যাও বাড়ছে। সেই বিষয়টা মাথায় রাখলে শেষ দিকে এসে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে কিছুটা হলেও রাজ্য প্রশাসন স্বস্তিতে রয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা। যদিও এটাই সার্বিক প্রবণতা, এমনটা এখনই বলতে নারাজ তাঁরা।

কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে মৃত্যু নিয়ে। রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের। বেশ কিছুদিন ধরে মৃতের সংখ্যা ৫০ এর কাছাকাছি থাকার পর শুক্রবার থেকে তা ঊর্ধ্বমুখী। শুক্রবার মারা গিয়েছিলেন ৫৭ জন। শনিবার মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। আজ অবশ্য ১ জন কমেছে। এই নিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩ হাজার ৮৮৭। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায় (১৩ জন)। তার পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কলকাতা (১২), হাওড়া (৭) হুগলি (৪), দক্ষিণ ২৪ পরগনার (৩) মতো জেলা।

মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ক্রমাগত স্বস্তি মিলছে সুস্থতার হারে। রবিবারও সুস্থতার হার বেড়েছে ০.১৪ শতাংশ। শনিবার এই হার ছিল ৮৬.২৬ শতাংশ। রবিবার বেড়ে হয়েছে ৮৬.৪০ শতাংশ। রবিবারের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ৫৬৪ জন। শনিবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৪২। এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে করোনার সংক্রমণ মুক্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ১৩৯ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ২৩ হাজার ৬২৪ জন। রবিবার সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১০৩।

সুস্থতার হারের পাশাপাশি সংক্রমণের হারেও কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা। প্রতি দিন যত জনের কোভিড টেস্ট করানো হয় এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এই হার যত নিম্নগামী হবে, করোনা সংক্রমণও তত কমতির দিকে বলে ধরা হয়। রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী সংক্রমণের হার ৬.৭৯ শতাংশ। শনিবার এই হার কিছুটা কম (৬.৬২) থাকলেও উদ্বেগজনক হারে বাড়েনি। রবিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ৪৭ হাজার ৩১৮টি। শনিবার এই সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ১৩১।

রাজ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের গোড়া থেকেই কলকাতা শীর্ষে ছিল। তবে গত প্রায় এক মাস ধরে কলকাতায় সংক্রমণ কিছুটা কমেছে এবং সেই জায়গায় উত্তর ২৪ পরগনার সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। কখনও কলকাতার চেয়ে কিছু বেশি নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলছে, কখনও সামান্য কিছু কম। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা শীর্ষে থাকলেও রবিবার ফের কলকাতায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। মহানগরীতে ২৪ ঘণ্টায় কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৫৪১ জনের। উত্তর ২৩ পরগনায় ৫২৭ জনের। এ ছাড়া শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এমন জেলাগুলি হল পশ্চিম মেদিনীপুর (২২০), হুগলি (২০৯), হাওড়া (১৭২), নদিয়া (১৩৭), পূর্ব মেদিনীপুর (১৩৫), পশ্চিম বর্ধমান (১২১), দার্জিলিং (১১৭) ও মুর্শিদাবাদ (১০৪)।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Coronavirus, #corona effect, #covid-19

আরো দেখুন