দিল্লি হিংসা মামলায় গ্রেফতার উমর খালিদ
দিল্লি হিংসার ঘটনায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সদস্য উমর খালিদকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। গোটা ঘটনায় উমরকে অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
দিল্লি হিংসার তদন্তে বেশ কিছু দিন ধরেই দিল্লি পুলিশের নজরে ছিলেন উমর খালিদ। শাহিনবাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন, সেখানে তিনি উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে গত ১ অগস্টও উমরকে এক দফা জেরা করে পুলিশ।
তার পর রবিবার ফের উমর খালিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সকাল থেকে টানা ১১ ঘণ্টা জেরার পর, এ দিন তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। পুলিশের দাবি, আম আদমি পার্টির (আপ) প্রাক্তন কাউন্সিলর তাহির হুসেনের সঙ্গে মিলে দাঙ্গার ষড়যন্ত্র কষেছিলেন উমর। এর আগে, গত ৩ অগস্ট তাহির জেরায় দাঙ্গায় নিজের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন বলে জানা গিয়েছে।
দিল্লি হিংসার ঘটনায় গত ৬ মার্চ প্রথম উমর খালিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। তাতে বলা হয়, উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকাকালীন রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে দিল্লিবাসীকে উন্ধন জোগান উমরই, যাতে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করা হচ্ছে, এমন বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দেওয়া যায়।
যদিও দিল্লি পুলিশের আনা অভিযোগ সেইসময় অস্বীকার করেন উমর। ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। গত ৪ সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যমে উমর অভিযোগ করেন, দেশে এই মুহূর্তে দু’ধরনে আইন চলছে। শাসক দলের সমর্থকদের জন্য একটি, অন্যটি সাধারণ মানুষের জন্য, যাঁরা সরকারের সমালোচনা করার সাহস দেখান।
বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে গত বছর ডিসেম্বরে সংসদে সংশোধিত্ব নাগরিকত্ব আইন পাশ করিয়ে নেয় মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেইসময় তেতে ওঠে রাজধানী দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশ। শাহিনবাগ-সহ একাধিক এলাকায় সিএএ বিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দেয়। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর চলাকালীন, সিএএ বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষে পরিস্থিতি তেতে ওঠে। তাতে ৫৩ জন প্রাণ হারান। আহত হন ২০০-র বেশি মানুষ।
সেই ঘটনার তদন্তে সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের তরফে যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে নাম রয়েছে সীতারাম ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র যাদব, অধ্যাপক জয়তী ঘোষ, তথ্যচিত্র নির্মাতা রাহুল রায়-সহ আরও বেশ কয়েক জনে রাজনীতিক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও।