দেশ বিভাগে ফিরে যান

রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ কেন, ক্ষোভ বিরোধীদের

September 15, 2020 | 2 min read

ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ সংশোধনী বা কৃষিজ পণ্যের ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত সংশোধনী, ছ’মাস পরে সংসদের প্রথম অধিবেশনে বিল এনেই ফের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানার অভিযোগের মুখে কেন্দ্র। তারই মধ্যে জোর বিতর্ক বাধল অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের উদ্দেশে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের ‘ব্যক্তিগত খোঁচায়’। সৌগতের দাবি, সংসদের পক্ষে অবমাননাকর কিছু তিনি বলেননি। কিন্তু ওই মন্তব্য লিখিত রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ক্ষিপ্ত বিজেপি শিবিরকে আশ্বস্ত করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা।

২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণার অঙ্গ হিসেবেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা জানিয়েছিলেন, কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সংস্কারের দৌলতে এ বার থেকে নিজের মর্জি মাফিক দেশের যে কোনও প্রান্তে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবেন চাষি। এ বিষয়ে জারি করা হয়েছিল অধ্যাদেশও। সেই অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তরিত করার জন্য এ দিন লোকসভায় বিল আনতেই আক্রমণের মুখে পড়ে মোদী সরকার। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, গৌরব গগৈ, তৃণমূলের সৌগতরা অভিযোগ তোলেন, কৃষি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও, তাতে দখলদারি করে এই বিল এনেছে কেন্দ্র। সমবায় ব্যাঙ্ক পরিচালনার ভার রাজ্যের হাতে থাকায় একই অভিযোগ ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ সংশোধনীর ক্ষেত্রেও।

কিন্তু কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরের আশ্বাস, আন্তঃরাজ্য ফসল বিক্রিবাটার বিষয়টি থাকায় কেন্দ্রের আইন তৈরির এক্তিয়ার আছে বলেই এ বিষয়ে বিল এনেছেন তাঁরা। আর নির্মলার বক্তব্য, সমবায় ব্যাঙ্কে রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপের কোনও লক্ষ্য সংশোধনীতে নেই। শুধু তাদের উপরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ করতেই এই বিল-পদক্ষেপ।

কংগ্রেস ও তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ, এই বিল পাশ হলে, তা আদৌ চাষির হাত শক্ত করবে না। বরং মোটা মুনাফা করার সুযোগ খুলে দেবে কর্পোরেট দুনিয়ার সামনে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, এই অধ্যাদেশ জারির লক্ষ্যই হল, চাষিরা যাতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যটুকু পর্যন্ত না-পেয়ে পুঁজিপতির কাছে নিজের জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন।

তোমরের অবশ্য দাবি, কৃষিজ পণ্যের ব্যবসা-বাণিজ্য (প্রসার ও সুবিধে) সংশোধনী আর মূল্য নিশ্চয়তা সংক্রান্ত কৃষক সমঝোতা (ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা) এবং কৃষি পরিষেবা সংশোধনী বিল আনা হচ্ছে চাষিদের স্বার্থেই। তবু আজও ২০টি রাজ্যে প্রায় ১০ লক্ষ কৃষক এই প্রস্তাবিত আইনের বিরোধিতা করেছে বলে সারা ভারত কিসান সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির দাবি। সমিতির রাজ্য শাখার ডাকে বাংলা জুড়েও এ দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। কলকাতায় মৌলালির মোড়ে বিক্ষোভ-সভায় ছিলেন সমন্বয় সমিতির সর্বভারতীয় সম্পাদক অভীক সাহা, রাজ্য সম্পাদক কার্তিক পাল, মদন ঘোষ প্রমুখ।

অধিবেশনের প্রথম দিনেই পাশ হয়েছে দু’টি বিল। হোমিয়োপ্যাথি এবং ভারতীয় ওষুধ (মূলত আয়ুর্বেদ) কমিশন তৈরির। কিন্তু বিতর্কের ছাপ সেখানেও। লোকসভায় স্পিকার একাধিক বার বলেছেন, সকলের কাছে তাঁর অনুরোধ, অন্তত দু’টি বিল পাশ হোক। যাতে অন্তত কিছুটা ‘কাজ দেখানো’ যায়। বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন, পর্যাপ্ত বিতর্ক ছাড়া বিল পাশই কি তবে কাজের নতুন মাপকাঠি?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Congress, #Parliament, #tmc

আরো দেখুন