বিজেপি নেতারা বাঁচতে দিলো না আমায় – আত্মঘাতী হিন্দমোটরের যুবক
বিজেপি নেতাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষ অবধি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার করলেন হিন্দমোটরের এক যুবক। তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে সেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগও জানিয়েছেন। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। গতকাল হিন্দমোটর বিবেক দল স্কুল রোডের বাড়িতেই কুন্তল বোসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। সেই ভিডিওতে মৃতের অভিযোগ, স্থানীয় কিছু বিজেপি নেতার অত্যাচারই তাঁকে বাঁচতে দিল না। কুন্তলের মৃত্যুর পরই উত্তরপাড়া থানা এই ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার সূত্রপাত মাসতিনেক আগে। লকডাউনের মধ্যেই কুন্তলের স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় কুন্তলকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি দিনচারেক আগে জামিনে মুক্তি পান তিনি। অভিযোগ, মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে আসার পর তাঁর উপর চরম অত্যাচার শুরু করে স্থানীয় বিজেপি নেতারা। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই শেষপর্যন্ত আত্মহত্যা করে কুন্তল।
মৃতের দিদির অভিযোগ, রবিবার তাঁর ভাইকে বিজেপি নেতা মধু-সহ আরও বেশ কয়েকজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ভাইকে ইট ছুঁড়ে মারে। ভাইকে মারার সময় তিনি যাতে কোনও বাধা না দিতে পারেন সে কারণ তাঁকেও আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর দিদির আরও অভিযোগ, বাড়িটা দখলের উদ্দেশ্যেই ভাইয়ের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছিল। কারণ ভাই জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই তাঁকে এখানে থাকতে দিতে রাজি ছিল না বিজেপি নেতা এবং এলাকার বেশ কয়েকজন। বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য চাপ তৈরি করা হয়।
প্রসঙ্গত, আত্মহত্যার আগে নিজের মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেন কুন্তল। সেখানে কুন্তলকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “ওরা ঘরে ঢুকেছিল মারতে। দিদি একা লড়ছে। দিদিকেও খুব মেরেছে। বাঁচার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বাঁচতে দিল না।” এরপরই কুন্তল গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ আত্মহতায় প্ররোচনা এবং মারধরের অভিযোগে ৮ জন স্থানীয় বিজেপি নেতা-নেত্রীকে করেছে। ধৃতদের আজ শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।