৩০ সেপ্টেম্বর বাবরি-ধ্বংস মামলার রায়
লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী দু’জনেই বাবরি মসজিদ ধ্বংসে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। দাবি করেছিলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। উমা ভারতী অবশ্য বলেছিলেন, তাঁকে যদি ফাঁসি দেওয়া হয়, তা হলেও তিনি নিজেকে ধন্য বলে মনে করবেন।
৩০ সেপ্টেম্বর লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় ঘোষণা করবে। সে দিনই জানা যাবে, আডবাণী, জোশী, উমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হল কি না। রায় ঘোষণার দিন ৯২ বছর বয়সি আডবাণী-সহ ৩২ জন অভিযুক্তকেই আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লখনউয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদবের গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাঁর মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়।
ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দিয়েছে। রামমন্দিরের শিলান্যাসও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই মামলাতেও সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করেই বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল। বাবরি মসজিদ ভাঙা অন্যায় হয়েছিল। বস্তুত এর আগে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এক বার ২০০১ সালে আডবাণী ও অন্যদের বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৭-য় সুপ্রিম কোর্টই সেই নির্দেশকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দেয়। সিবিআইয়ের আর্জি মেনে ফের আডবাণীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ চাপানো হয়। সেই সময়েই প্রতিদিন শুনানি করে দু’বছরের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশও দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। ওই নির্দেশের আগে লখনউয়ে করসেবকদের বিরুদ্ধে এবং রায়বরেলীতে আট জন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই রায়বরেলীর মামলাও লখনউয়ের আদালতে সরিয়ে আনা হয়।
নরেন্দ্র মোদীর হাতে অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে আডবাণী, জোশীদের কেউ আমন্ত্রণ পাননি। কিন্তু শিলান্যাসের কয়েক দিন আগে তাঁরা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহ ছাড়া কেউই নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে কোনও নথি বা সাক্ষী হাজির করেননি। এখন ৩০ সেপ্টেম্বরের রায়ের পরে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ঢেউ উঠবে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে ২৮ বছর ধরে এই মামলা চলেছে। আডবাণী, জোশী, উমাদের মতো বিজেপি নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়। তিন দশক ধরে মামলা চলায় ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল, গিরিরাজ কিশোর-সহ ১৭ জন আগেই মারা গিয়েছেন।